শিলিগুড়িঃ ছাত্রী খুনের প্রতিবাদে শাসকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে দলের বিদ্রোহীদের বার্তা দিল বিজেপি। শনিবার হাজার হাজার কর্মী সমর্থকদের নিয়ে শিলিগুড়িতে একটি প্রতিবাদ মিছিল করে বিজেপি। মিছিলের নেতৃত্বে দার্জিলিং সাংসদ রাজু বিস্ট, বিধায়ক শংকর ঘোষ, নব নির্বাচিত জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডলকে দেখা গেলেই অনুপস্থিত ছিলেন মাটিগাড়া নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মন। ছিলেন না ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক দূর্গা মুর্মুও। মিছিল একপ্রকার সফল হলেও আনন্দময়ের অনুপস্থিতিতে অস্বস্তি এড়াতে পারলো না বিজেপি।
২২ অগাস্ট স্কুল থেকে ফেরার পথে মাটিগাড়া এলাকায় খুন হন এক একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। এই ঘটনার পর উত্তপ্ত হয় পাহাড়-সমতল। ছাত্রী খুনের প্রতিবাদে গত বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে বনধ পালন করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। শনিবার ২৪ ঘন্টার বনধ পালিত হয় দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায়। এদিনই শিলিগুড়িতে এক প্রতিবাদ মিছিল করে বিজেপির দার্জিলিং জেলা কমিটি। মিছিলে হাঁটেন দার্জিলিং সাংসদ রাজু বিস্ট, দার্জিলিং এর বিধায়ক নীরজ জিম্বা, শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ সহ কয়েক হাজার কর্মী সমর্থক। এদিনের মিছিলে প্রত্যাশামতই অনুপস্থিত ছিলেন মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় ঘোষ, ফাঁসিদেওয়ার বিধায়ক দূর্গা মুর্মু। স্বভাবতই তাঁদের অনুপস্থিতিই উসকে দিল নয়া বিতর্ক। আনন্দময় বর্মনকে বিজেপির জেলা সভাপতির পদ থেকে সরিয়ে আনা হয় অরুণ মণ্ডলকে। অরুণ মণ্ডল সভাপতি হওয়ার পরই তাঁর প্রতি অনাস্থা এনে মোট ৪৮ জন পদাধিকারী পদত্যাগ করেন জেলা ও মণ্ডল কমিটি থেকে। যার মধ্যে রয়েছেন ফাঁসিদেওয়ার বিজেপি বিধায়ক দূর্গা মুর্মু। দলের একাংশের মতে, এদিনের মিছিল শুধুমাত্র ছাত্রী খুনের প্রতিবাদ মিছিলই ছিল না, ছিল দলের বিদ্রোহীদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তাও। ব্যাক্তির থেকে দল বড় এটাই প্রমাণ করতে চাইলেন দলীয় নেতৃত্ব। যদিও আনন্দময় বর্মণের অনুপস্থিতিতি নিয়ে সাফাই গাইলেন জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডল। এদিন অরুণ বলেন, ‘দলের অন্দরে কোনও কোন্দল নেই। আনন্দময় বর্মন দলের নির্দেশে ধূপগুড়িতে গিয়েছেন নির্বাচনী প্রচারে। তাই তিনি মিছিলে উপস্থিত হতে পারেননি’।
এদিন মিছিল শুরুর বেশ কিছুক্ষণ আগেই মাটিগাড়ায় ছাত্রীর বাড়িতে গিয়েছিলেন রাজু বিস্ট। সাংসদের সেখানে যাওয়ার আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মন। রাজু বিস্ট মৃত ছাত্রীর বাড়িতে ঢোকার সময়ই বেড়িয়ে যান আনন্দ। দুজনে মুখোমুখি হলেও দুজনের মধ্যে কোনও কথা হয়নি বলে সূত্রের খবর। যা দলীয় কর্মীদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।
এদিন ছাত্রী মৃত্যুর প্রতিবাদ মিছিলটি বের হয় এয়ারভিউ মোর থেকে। শেষ হয় ভেনাস মোরে। এদিন ছাত্রী হত্যা প্রসঙ্গে রাজু বিস্ট বলেন, ‘মণিপুর নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা গলা ফাটালেও শিলিগুড়ির মৃত মেয়েটিকে নিয়ে কোনও সহানুভূতি নেই। আজ অবধি এই খুনের ঘটনায় একটিও শব্দ ব্যয় করেননি। পাশাপাশি পুলিশ খুনিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। এরাজ্যে প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ। ঘটনায় ধৃত যুবকের অবিলম্বে ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’