বক্সিরহাটঃ লোকসভা ভোটের (Loksabha) আগে বিজেপির আদি-নব্যের কোন্দল আরও জোরালো হল তুফানগঞ্জ-২ ব্লকে (Tufanganj)। রাতের অন্ধকারে দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যের ওপর হামলার প্রতিবাদে যে কার্যালয়ের সামনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন, শনিবার সেই কার্যালয়ের সামনেই ফের ধর্নায় বসে অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সরব হলেন বিক্ষুব্ধরা।
একদিকে যখন দলের বিক্ষুব্ধদের বিজেপি (BJP) কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ চলছে, তখন ঢিল ছোড়া দূরত্বে বিধানসভা ভিত্তিক সভা করলেন স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক মালতি রাভা (Malati Rava) রায়। অভিযোগ, সেই সভাতেও ডাকা হয়নি দলের বিক্ষুব্ধদের। ফলে এই নিয়ে বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ আরও চওড়া হল তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের বারকোদালি -১ গ্রাম পঞ্চায়েতে। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বারকোদালি -১ গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছে বিজেপি। লোকসভা ভোটের আগে সেই এলাকাতেই বারংবার বিজেপির আদি – নব্য গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসায় স্বাভাবিকভাবেই বিপাকে পড়েছে পদ্ম শিবির।
সম্প্রতি ওই গ্রাম পঞ্চায়েত পুরোনোদের বদলে নতুন তিনজনকে নির্বাচিত করেন তুফানগঞ্জ-২ মণ্ডল সভাপতি রঞ্জন রাভা। গত বৃহস্পতিবার রাতে ইট ভাটায় কর্মী নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিজেপির পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্য হরেন্দ্রনাথ বর্মা, প্রাক্তন শক্তিপ্রমুখ জীতেন্দ্রনাথ বর্মন, ওবিসি মোর্চার সোশ্যাল মিডিয়া ইনচার্জ দেবব্রত মজুমদারের ওপর লাঠি নিয়ে অতর্কিত হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। গুরুতর জখম হন তিনি। এই ঘটনায় নাম জড়ায় দলেরই মণ্ডল সভাপতি রঞ্জন ঘনিষ্ঠ নতুন শক্তিপ্রমুখদের বিরুদ্ধে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্য হরেন্দ্রনাথ বর্মা। দলের পুরোনোদের ওপর হামলার ঘটনায় জেলা সভাপতির হস্তক্ষেপের দাবিতে শুক্রবার ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাশিয়াবাড়ি দলীয় কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির বিক্ষুব্ধ কর্মী – সমর্থকরা। তাঁদের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতির স্থানীয় সদস্য হরেন্দ্রনাথ বর্মা সহ অন্যান্য নেতাদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে। যে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে, সেই কমিটি বাতিল করতে হবে।
বিজেপি সুত্রে খবর, দলীয় কোন্দল মেটাতে স্থানীয় একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিধানসভা ভিত্তিক বৈঠক ডাকেন তুফানগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক মালতী রাভা রায়। সেই বৈঠকেও ডাকা হয়নি দলের পুরোনো নেতা- কর্মীদের। ফলে দলের পুরোনোদের মধ্যে এই নিয়ে ক্ষোভ আরও চওড়া হয়েছে। যদিও শেষ পর্যন্ত বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের তরফে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেওয়া হলে অবস্থান তুলে নেন দলের বিক্ষুব্ধ নেতা- কর্মীরা।
এ ব্যাপারে তুফানগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক মালতি রাভা বলেন, ‘দলীয় সংবিধান মেনে মণ্ডল সভাপতি একটি কমিটি তৈরি করেছেন। দলের কারা ধর্নায় বসেছে তা জানা নেই। তবে আগামীকাল সাংগঠনিক বৈঠক রয়েছে সেখানেই বিষয়টি নিয়ে বিস্তর আলোচনা হবে।’