রায়গঞ্জ: প্রার্থী তালিকা পছন্দ না হওয়ায় এবং সদ্য তৃণমূল ত্যাগীরা টিকিট পেয়ে যাওয়ায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিজেপির নেতা-নেত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমশই বাড়ছে। এবার সেই ক্ষোভ দেখা গেল উত্তর দিনাজপুর জেলায়। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি বীণা ঝা শুক্রবার দলের নেতৃত্ব ও সাংসদের বিরুদ্ধে একরাশ অভিযোগ এনে রায়গঞ্জ বিজেপির জেলা কার্যালয়ের সামনে অনশনে বসেন। বেলা গড়িয়ে দুপুর হলেও তিনি অনশন চালাতে থাকেন।
বীণাদেবী অভিযোগ করে বলেন, ‘জেলা সভাপতি ও সাংসদ কথা দিয়ে কথা রাখেননি। আমাকে রায়গঞ্জের ১৭ নম্বর জেলা পরিষদ আসনে প্রথমে প্রার্থী করার কথা দিলেও পরে রায়গঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে ২৫ নম্বর আসনে প্রার্থী পদের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিতে বলেন। আমি মনোনয়নপত্র জমা করি। এখন নেতারা বলছেন আমার জায়গায় প্রার্থী হবেন সদ্য তৃণমূল থেকে আসা মানস ঘোষের স্ত্রী। ২৭ নম্বর আসনে আমাদের দলের প্রার্থী হবেন মানস ঘোষ। দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়া যায় না।’ মানস ঘোষ জয়ী হয়েই আবার তৃণমূলে চলে যাবেন বলে দাবি করেন তিনি। যতক্ষণ না পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হচ্ছে ততক্ষণ অনশন চলবে বলে দাবি করেন তিনি।
দলের এই সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রাক্তন জেলা সভাপতি বিশ্বজিৎ লাহিড়ী। তিনি বলেন, ‘যারা সারা বছর দলের ঝান্ডা বহন করে তাঁদের এভাবে সরিয়ে দিয়ে সদ্য তৃণমূল থেকে আগত একজনকে প্রার্থীপদ দেওয়া ঠিক হবে না। দলের নীচু তলার কর্মীদের মনোবল ভেঙে পড়বে। গ্রামেগঞ্জে তৃণমূল কংগ্রেসের অত্যাচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকেন বীণাদেবী। আশাকরি এ ব্যাপারে দল সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে।‘ যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন কেটে দেন।
সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরী জানান, বীণাদেবীর বয়স হয়েছে তাই তিনি বুঝতে চাইছেন না। আমরা তাঁর সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মিটিয়ে ফেলব। এটা তো ছোট ব্যাপার। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কত বিষয় আসে, একসঙ্গে একটা আসনে পাঁচটা-ছয়টা করে নমিনেশন জমা পড়েছে। মানস ঘোষের টিকিট পাওয়ার বিষয়টি আমার জানা নেই। উনি টিকিট চেয়েছিল দেওয়া হয়নি। তবে ওনার স্ত্রীর জন্য চেয়েছেন সেটা বিবেচনা করবে দল। সদ্য তৃণমূল ত্যাগী মানস ঘোষের দাবি, ‘আমার স্ত্রী তো ভোটে নমিনেশনই জমা করেনি। দল কী করবে জানি না। বীণাদেবী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতেই পারেন, সেটা তাঁর ব্যাপার।’