উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: শিলিগুড়ির বিজেপিতে অব্যাহত দ্বন্দ্ব। গত দুদিনে সবমিলিয়ে ৪৮ জন নেতা পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। শুক্রবার পদত্যাগ করেন ফাঁসিদেওয়ার বিজেপি বিধায়ক দুর্গা মুর্মু। দলের জেলা সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন তিনি।
দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া বিধানসভা কেন্দ্র থেকে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিধায়ক হিসেবে নির্বাচিত হন দুর্গা মুর্মু। পরবর্তীতে তাকে জেলা সম্পাদকের দায়িত্ব দেয় পদ্মশিবির। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ফলে সাংগঠনিক স্তরে রদবদল শুরু হয়েছে বিজেপিতে। তার প্রভাব পড়েছে জেলাগুলিতেও। শিলিগুড়িতে দলের নতুন সাংগঠনিক রদবদলকে ঘিরেই গোষ্ঠী কোন্দলের সূত্রপাত দার্জিলিং জেলায়।
এই ইস্তফা হিড়িকের পিছনে দলের দুই বিধায়ক শংকর ঘোষ ও আনন্দময় বর্মনের ছায়াযুদ্ধ দেখছে দলেরই একটা বড় অংশ। জেলা সভাপতির পদ থেকে আনন্দময়কে সরিয়ে দেওয়ার মূলে যেমন শংকরের কলকাঠি দেখছেন অনেকেই, তেমনই গণ পদত্যাগের পিছনে আনন্দময়ের হাত রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে গেরুয়া শিবির থেকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে দুজনেই ইস্তফা পর্ব থেকে নিজেদের দূরে রাখার কথা বলার পাশাপাশি লড়াইয়ের অস্বীকার করছেন। যেমন জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডলের দাবি, এখনও পর্যন্ত কেউ ইস্তফা দেননি। সবমিলিয়ে দুদিনে ৪৮ জন পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গিয়েছে। জেলা সভাপতি বিষয়টি অস্বীকার করলেও যাঁরা ইস্তফা দিয়েছেন, তাঁরা কোনও রাখঢাক করছেন না। যেমন সহ সভাপতির পদে ইস্তফা দেওয়া মনোরঞ্জন মণ্ডল বলছেন, ‘হ্যা, আমি পদত্যাগ করেছি। কেন না, যাঁরা দলের সাংগঠিনিক শক্তি বৃদ্ধিতে কাজ করে গিয়েছেন, তাঁদের কমিটিতে রাখা হয়নি। যাঁদের কোনও অবদান নেই, তাঁরা ভালো পদ পেয়েছেন দলে। এটা মেনে নেওয়া যায় না। জেলা সভাপতির পদ থেকে আনন্দকে সরিয়ে দেওয়াটাও মেনে নিতে পারছি না। মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর পদে ইস্তফা দেওয়া শিখা মিত্রর তোপ, দলে অনেক যোগ্য রয়েছেন। কিন্তু তাঁদের গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না। পরিযায়ীরা গুরুত্ব পাচ্ছেন দলের এক শ্রেণির নেতৃত্বের কাছে। কখনওই তা মেনে নেওয়া যায় না। শিলিগুড়ির বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেন, ‘ইস্তফার ব্যাপারে আমি কিছু জানি না। কোনও সূচনা আমার কাছে নেই।’ আনন্দময়ের বক্তব্য, ‘বিজেপিতে চিরস্থায়ী পদের বন্দোবস্ত নেই। দলের নির্দেশ মেনে কাজ করি। ৬ অগাস্ট নতুন জেলা সভাপতি হওয়ার পর তো কোনও বিরোধ দেখা দেয়নি। ২০ অগাস্ট জেলা কমিটি তৈরি হওয়ার পর তা নিয়ে অনেকেই আপত্তি তুলেছেন বলে শুনতে পেরেছি। এর পিছনে আমার হাত থাকার অভিযোগ ঠিক নয়। ’ এখন দেখার পদ্ম-পাতার জল কতদূর গড়ায়।