চোপড়া: চোপড়ায় আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনায় এলাকার বিধায়ক হামিদুল রহমানকে দায়ী করলেন দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্টা। সোমবার চোপড়া থানার আমবাড়ির লোধাবাড়ি এলাকা পরিদর্শন করেন তিনি। এরপরই আক্রান্তদের বাড়িতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন সাংসদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শিলিগুড়ির বিজেপি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডল সহ অন্যরা।
রাজু বিস্টার কথায়, ‘সাতদিন আগে এখানে আদিবাসীদের ওপর হামলা হয়েছে। অনেকে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এখানে এসে জানতে পারলাম এলাকার তৃণমূল বিধায়ক হামিদুল রহমান জমি মাফিয়াদের সঙ্গে মিলে হামলা করিয়েছে। রাজ্যে আদিবাসীরা সুরক্ষিত নেই। আদিবাসীদের পাট্টা দেওয়ার বদলে জমি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা চলছে।’ অন্যদিকে, এদিন এলাকায় আসার পথে পুলিশের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ তোলেন সাংসদ। পুলিশকর্তাদের সতর্ক করেন তিনি। হুঁশিয়ারির সুরে রাজু বিস্টা বলেন, ‘এলাকার আদিবাসীদের সুরক্ষার ব্যাবস্থা করতে হবে, না হলে প্রয়োজনে সেনা দিয়ে সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।’ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত আক্রান্তদের খাবারের ব্যবস্থা, পোশাক দেওয়ার পাশাপাশি ১২টি টিনের ঘর করার কথা ঘোষণা করেন সাংসদ। এলাকার সমস্যার কথা এদিনই ভারত সরকারকে জানানো হবে বলে সাংসদ জানান।
সাংসদের অভিযোগ প্রসঙ্গে বিধায়ক হামিদুল রহমান বলেন, ‘তিনি কীভাবে বুঝলেন আমি জড়িত আছি। বাগানে একটা সমস্যা চলছে পুলিশ-প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।’ এদিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, ‘চোপড়া সাংসদ রাজু বিস্টার এলাকা হলেও তাঁকে কোনওদিন এখানে দেখা যায় না।’
চোপড়ার হাপতিয়াগছ গ্রাম পঞ্চায়েতের আমবাড়ি-লোধাবাড়ি এলাকায় পেয়ারিলাল টি কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড চা বাগানের দখল করাকে কেন্দ্র করে গত কয়েক মাস ধরে ঝামেলা চলছে। আদিবাসী সেঙ্গেল অভিযানের ব্লক কমিটি থেকে বাগান বিক্রির প্রতিবাদে আন্দোলন শুরু হয়। সম্প্রতি এ নিয়ে চা বাগান মালিকের সঙ্গে আদিবাসীদের সংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল আমবাড়ি এলাকা। পরস্পরের বিরুদ্ধে গুলি, তির, পাথর ছোড়ার অভিযোগ ওঠে। সংঘর্ষে জখম হন উভয়পক্ষের মোট ১৪ জন। এরমধ্যে দু’জন এখনও উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গত শনিবারই চোপড়ায় আক্রান্ত আদিবাসীদের সঙ্গে দেখা করেন ভাঙরের ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ)-এর বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। আক্রান্ত আদিবাসী পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি, তাঁদের দলের তরফে সকলের খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।