কলকাতা: আগামীদিনে রাজ্যে ১০ লক্ষ কর্মসংস্থান হবে। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে কলকাতার মেয়ো রোডে এমনটাই বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি তিনি জানালেন, রাজ্যের বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, কাজের অভাব থাকবে না। দুয়ারে সরকারে পরিযায়ী শ্রমিকদের নাম-ঠিকানা নথিভুক্ত করা হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, শিক্ষকদের ২৪ হাজার শূন্যপদ রয়েছে, কিন্তু কেউ গিয়ে মামলা করে দিচ্ছে।
এদিন পরিযায়ী শ্রমিক প্রসঙ্গে মমতা জানান, বাংলায় সব সুবিধা দেওয়া সত্ত্বেও কেউ বাইরে কাজ করতে গেলে সরকারের কিছু করার নেই। তিনি বলেন, ‘এখানে সব করে দিয়েছি। ব্যবসার টাকাও দেব বলেছি। তাও কেউ বাইরে গেলে আমি কী করতে পারি? বাংলা তো শিক্ষায় এক নম্বর। তাও বাইরে পড়তে যান অনেকে। যেতেই পারেন।’ তিনি জানান, সামাজিক নিরাপত্তায় পশ্চিমবঙ্গ সারা দেশে প্রথম।
এদিন মেয়ো রোডের গান্ধি মূর্তির পাদদেশে শাসকদলের ছাত্র শাখার প্রতিষ্ঠা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠেই প্রবল রোদের মধ্যে ধৈর্য ধরে বসে থাকা ছাত্র যুবদের কৃতজ্ঞতা জানান মুখ্যমন্ত্রী। নিজের ছাত্র রাজনীতির সময়ের স্মৃতিচারণ করে তৃণমূল সুপ্রিমো বলেন, ‘আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে এসেছি। এটাই আমার গর্ব। ববি, অরূপ, মদন এরা সবাই ছাত্র সময় থেকেই রাজনীতি করে আসছে। কলেজে পড়ার সময় দুধের ডিপোতেও কাজ করেছি। সেই টাকাটা যোগমায়া দেবীর কলেজ প্রেসিডেন্ট হিসেবে পড়ুয়াদের জন্য খরচ করতাম। ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারের খরচা। আমাকে সেসময় ডিএসও টানার অনেক চেষ্টা করেছে। কিন্তু দল বদল করতে পারিনি। কী করে যাব আমার বাবা যে স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিল। কিন্তু পরে কংগ্রেস করতে গিয়ে দেখলাম, তারা সিপিএমের সঙ্গে এমন আঁতাত করল যে ২১ জুলাই ১৩টা প্রাণ চলে গেল। কিন্তু তারপরও কংগ্রেস কাউকে পাঠায়নি।’ এই প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ছাত্র সংগ্রামের কথা সবার সামনে তুলে ধরেন। সিপিএম থেকে বিরোধীদের আক্রমণ করে অতীতে তাঁর উপর হওয়া আক্রমণের বৃন্তান্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘একবার তো রটে গেল আমি মারা গিয়েছি। সংসদ পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে গিয়েছিল।’ চন্দ্রযান-৩-এর অবতরণ দেখতেই পাননি বলে জানালেন মমতা। তিনি বলেন, ‘টিভির সামনে বসেছিলাম। ল্যান্ডিংটা তো দেখতেই পেলাম না। সফট ল্যান্ডিং হল না রাফ, বোঝা গেল না।’ বাংলার ২৮ বিজ্ঞানী ইসরোর চন্দ্রাভিযানে রয়েছে বলে জানালেন মমতা।
বাজি কারখানার বিস্ফোরণের কথা বলতে গিয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে তো মানুষ মরছেন। রেল দুর্ঘটনায় ৩০০ জন মারা গেলেন। মিজোরাম, মণিপুর, উত্তরপ্রদেশ, গুজরাটে মানুষ মারা যাচ্ছেন। সেখানে তো কোনও দল পাঠানো হচ্ছে না।’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন অন্তর্বর্তিকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউয়ের প্রসঙ্গেও এদিন মুখ খোলেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, বিজেপির লোককে উপাচার্য করা হয়েছে। মেয়ো রোড থেকে বাজি শ্রমিকদের উদ্দেশে মমতার পরামর্শ, সবুজ বাজি তৈরি করুন। তাতে টাকা কিছুটা কম হবে। কিন্তু জীবন তো বাঁচবে।