উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শুক্রবার বিধানসভায় পাশ হয়ে গেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করতে সার্চ কমিটি সংক্রান্ত সংশোধনী বিল। এদিন ‘দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি ল (সংশোধনী) বিল ২০২৩’ পাশ হল ১২০-৫১ ভোটে। বিলটি পাশ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অধিবেশন থেকে বেরিয়ে যান বিরোধী বিজেপি বিধায়করা। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে এই বিলের বিরোধিতা করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। বিধানসভায় পাশ হওয়া এই বিলে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস স্বাক্ষর করলেই তা আইনে পরিণত হবে। এই বিলে যাতে রাজ্যপাল স্বাক্ষর না করেন, সেই কারণে অধিবেশন শেষ হতেই বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দল রাজভবনে যান। তাঁরা ওই বিলে স্বাক্ষর না করার অনুরোধ করেন।
সার্চ কমিটি গঠনে পরিবর্তন এনে গত মে মাসে অর্ডিন্যান্স জারি করা হয়েছিল। সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে একজন ইউজিসি চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও একজন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিনিধিকেও আনা হয় কমিটিতে। নতুন বিলের নিদান অনুযায়ী, ওই কমিটিতে থাকবেন সরকার এবং উচ্চ শিক্ষা সংসদের মনোনীত এক জন করে প্রতিনিধি। বিজেপি পরিষদীয় দলের অভিযোগ, এই বিলের মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ক্ষমতা খর্ব করে মুখ্যমন্ত্রী তথা রাজ্য সরকারের হাতে নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি, একতরফা অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করা নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্যের সংঘাত চরম আকার ধারণ করে। এদিন বিধানসভায় বিল নিয়ে বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর প্রশ্ন, ‘‘প্রাক্তন বিচারপতি ও প্রাক্তন সেনা আধিকারিকদের উপাচার্য পদে বসানো হচ্ছে। এঁদের কি কখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করার ১০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে? রাজ্যপাল যদি বিজেপি বিধায়কদের কথা মতো বিলে স্বাক্ষর না করেন, প্রমান হবে রাজভবন বিজেপির কথায় চলছে, যা আগে আমরা বহুবার অভিযোগ করে এসেছি, তা সত্য বলে প্রমাণিত হবে।’’
এর আগে ২০২২ সালে রাজ্যপালকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসানো সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায়। তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় বর্তমানে দেশের উপরাষ্ট্রপতি। তার পর কয়েক মাস অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গনেশনও ছিলেন রাজ্যের দায়িত্বে। গত বছর নভেম্বরে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন সিভি আনন্দ বোস। তাতেও সেই বিল অনুমোদন পায়নি। তাই উপাচার্য নিয়োগের জন্য আনা সার্চ কমিটি সংক্রান্ত বিল আদৌ রাজভবনের অনুমোদন পাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।