বীরপাড়া: রক্তাল্পতায় আগে থেকেই ভুগছিল! এবার ‘রক্তশূন্য’ হয়ে পড়ল বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক। বুধবার থেকে ব্লাড ব্যাংকের ভাঁড়ার শূন্য। এদিনও তাই। পাশাপাশি, বিকল হয়ে পড়েছে রক্তের বিভিন্ন গ্রুপ সংবলিত ইউনিট সংখ্যা নির্দেশক ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডটিও।
হাসপাতাল সূত্রের খবর, বেশ কিছুদিন ধরেই রক্তদান শিবির না হওয়ায় রক্ত মজুত হচ্ছে না। ব্লাড ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার অঞ্জন মল্লিক বলেন, ‘অত্যন্ত জটিল পরিস্থিতি। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষিত হলে আর কোনও শিবির হওয়ার সম্ভাবনাও থাকবে না। এপ্রিল মাসটা কী করে চলবে তা ভেবে পাচ্ছি না।’
বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালের ওপর মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১৯টি চা বাগান ছাড়াও ফালাকাটা ও বানারহাট ব্লকের বেশ কয়েকটি চা বাগান এবং ধূপগুড়ি ব্লকের একাংশের বাসিন্দারা নির্ভর করেন। রোগীর ভিড় লেগেই থাকে ওই হাসপাতালে। তবে প্রয়োজনের তুলনায় ওই হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে রক্তের জোগান বরাবরই কম, অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। সামনেই গ্রীষ্মকাল। বাড়বে রোগব্যাধি। তার চেয়েও বড় কথা, বীরপাড়া সহ সন্নিহিত এলাকায় প্রায়ই পথ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে অত্যন্ত জরুরি হলেও দুর্ঘটনায় আহতদের শূন্য ভাঁড়ার থেকে রক্ত জোগানো সম্ভব হবে না।
ভোট প্রচারের পারদ চড়ছে। নিজেদের প্রার্থীদের জেতাতে প্রচারে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না রাজনৈতিক দলগুলি। অথচ রক্তদান শিবির নিয়ে কোনও রাজনৈতিক দলেরই লক্ষণীয় উৎসাহ নেই কেন, সে প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠেছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি ইসলামাবাদ গ্রামের দরবেশ তফিয়তের (রহঃ) উরস মোবারক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত শিবিরে সংগৃহীত ৮৬ ইউনিট রক্ত বীরপাড়া হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছিল। রক্তসংকট প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার সেই উরস কমিটির সদস্য তথা তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের মাদারিহাটের ব্লক সভাপতি ফজলুল ইসলাম বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলি রক্তদান শিবির করতে আগ্রহী নয়। কারও রক্তের প্রয়োজন হলে নেতারা একে-ওকে ফোন করেই ক্ষান্ত হন। অথচ রক্তদান শিবির করতে এগিয়ে আসেন না।’
সেইসঙ্গে উঠে আসছে সাধারণ মানুষের সচেতনতার কথাও। ব্লাড ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত মেডিকেল অফিসার বলেন, ‘রক্তদানের মানসিকতাই এখনও সমাজে গড়ে ওঠেনি। অথচ নিয়মিত রক্তদান করলে নিজের শরীর ও সমাজ দুটিরই মঙ্গল।’ তৃণমূলের বীরপাড়া-১ অঞ্চল কমিটির সভাপতি সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘এক বছরে আমরা বীরপাড়ায় ২টি রক্তদান শিবির করেছি। অন্য রাজনৈতিক দলগুলিরও এগিয়ে আসা প্রয়োজন।’