সৌরভকুমার মিশ্র, হরিশ্চন্দ্রপুর: নিরাপত্তার অভাব দেখিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর এবং মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন স্থগিত করল প্রশাসন। প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া তৃণমূল পিছিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ বিরোধীদের। যদিও স্থানীয় বিধায়ক তজমুল হোসেন জানিয়েছেন, বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়েছে প্রশাসনের নির্দেশে। এর পিছনে তৃণমূলের কোনও হাত নেই।
শনিবার ছিল হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লকের হরিশ্চন্দ্রপুর এবং মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন। এই দুই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের জন্য কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ জারি করেছিল। কিন্তু শুক্রবার গভীর রাতে হঠাৎ করে ব্লক প্রশাসন নোটিশ জারি করে জানায়, এই দুই গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনে স্থানীয় পুলিশ ও প্রশাসন প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা দিতে অপারগ। তাই আপাতত বোর্ড গঠন ১৫ দিন পিছিয়ে দেওয়া হল। আর এই নোটিফিকেশন জারি হওয়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তর্জা। শাসকদল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে বোর্ড গঠন পিছিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাম-কংগ্রেস জোট।
রাজ্যের মন্ত্রী তজমুল হোসেনের গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা মহেন্দ্রপুর। বাম-কংগ্রেস জোটের অভিযোগ, মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ২০টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে ৯টি, বাম-কংগ্রেস জোট পেয়েছে ১০টি ও নির্দল পেয়েছে ১টি। নির্দল জোটকে সমর্থন করেছে। স্বাভাবিকভাবেই বোর্ড গঠনে এগিয়ে জোট। কিন্তু শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস যেন তেন প্রকারে পঞ্চায়েত দখল করতে নোংরা খেলায় নেমেছে বলে দাবি জোটের।
অন্যদিকে, হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে কংগ্রেস সাতটি আসনে, সিপিএম ৪টি, বিজেপি ছয়টি, শাসকদল তৃণমূল বারোটি আসন ও নির্দল একটিতে জয়লাভ করে। এদিন নির্দল, সিপিএম-কংগ্রেস এবং বিজেপি মিলে বোর্ড গঠনের কথা ছিল। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে প্রশাসন বোর্ড গঠন স্থগিত করে দেয়।
এলাকার প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মোস্তাক আলম জানান, প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে শাসকদল নোংরা খেলা শুরু করেছে। ওরা যেভাবেই হোক পঞ্চায়েত দখল করতে চায়। কিন্তু সেটা বাস্তবে সম্ভব হবে না। ১৫ দিন পিছিয়ে দিলেও তাঁরাই বোর্ড গঠন করবেন বলে জানিয়েছেন মোস্তাক। একই কথা জানান সিপিএম নেতা আনন্দ দাস।
অন্যদিকে, বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক সম্পাদক রূপেশ আগরওয়াল বলেছেন, ‘আমরা মনোনয়ন প্রক্রিয়া থেকে দেখছি শাসকদল বিরোধীদের মাথা তুলতে দিচ্ছে না। এখন প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে ওরা আদালতের নির্দেশকেও অমান্য করছে। এগুলি মানুষ কিছুতেই মেনে নেবে না।’
তবে এ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক তজমুল হোসেন জানিয়েছেন, বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত হয়েছে প্রশাসনিক নির্দেশে। এর পিছনে তৃণমূলের কোনও হাত নেই। প্রশাসন মনে করেছে নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব নয়, তাই বোর্ড গঠন প্রক্রিয়া স্থগিত রেখেছে।