মানিকচকঃ এখনও লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election 2024) নির্ঘন্ট ঘোষণা হয়নি। আর তাঁর আগেই মানিকচক (Manikchak) ব্লকে শুরু হয়ে গেল নাশকতা মূলক কার্যকলাপ। মঙ্গলবার ভরদুপুরে বোমার আওয়াজে কেঁপে উঠল মানিকচকের গোপালপুর। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় এই গ্রামেই দুষ্কৃতীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন এক তৃণমূলকর্মী। ভোটের আগে এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতেই এই বোমা বিস্ফোরণ বলে একে অপরের উপর দায় চাপাচ্ছে তৃণমূল ও কংগ্রেস।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুর দুটো নাগাদ গোপালপুরের জিসারতটোলায় রাস্তার পাশের ফাঁকা জমিতে একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। তবে কে বা কারা এই বোমা বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত সেই বিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে এলাকাবাসী। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসীর দাবি, বেশ কয়েকজন একটি টোটো তে করে এসে এই বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে তারা কারা বা তারা কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত সেই বিষয়ে চুপ গ্রামবাসী। মানিকচক পুলিশ ঘটনার তদন্তে নামলেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন কর্তারা।
উল্লেখ্য, গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন সাত সকালে ঠিক সেই স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় শেখ মালেক নামে এক তৃণমূল কর্মীর। তৃণমূল অভিযোগ করেছিল, কংগ্রেস আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এই ঘটনায় অভিযুক্ত কংগ্রেস নেতা শেখ সাইফুদ্দিনও গত তিন দিন আগে জামিনে ছাড়া পেয়েছেন। গোপালপুর অঞ্চলের তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতির দাবি, এলাকায় সন্ত্রাস সৃষ্টি করতেই কংগ্রেসের ষড়যন্ত্রে এই বিস্ফোরণ। পালটা দাবি কংগ্রেসের, শুধুমাত্র কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে করেছে তৃণমূল।
গোপালপুর অঞ্চল তৃনমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহম্মদ নাসির দাবি করেন, তৃণমূল কর্মী হত্যার মামলায় যুক্ত মূল আসামিরা এখন বাইরে। তারা মিলিতভাবে অভিযোগকারী ও সাক্ষীদের ভয় দেখাচ্ছে। অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দিচ্ছে। তা না হলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে। এলাকাবাসীকে ভয় দেখাতে ও আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে এলাকায় সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি করতে এই বিস্ফোরণ করেছে কংগ্রেস।
এই বিষয়ে মানিকচক ব্লক কংগ্রেস সভাপতি মতিউর রহমান দাবি করেন, পুলিশ প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে সেই এলাকার আমাদের নেতা শেখ সাইফুদ্দিনকে জেলে পাঠিয়েছিল শাসক দল। গত তিন দিন আগে তিনি জামিন পেয়েছেন। তাই আবারও আমাদের নেতা কে মিথ্যা মামলায় ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে এই বিস্ফোরণ করেছে তৃণমূল।
তবে এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনকে চরম কটাক্ষ করে সিপিআইএম নেতা দেবজ্যোতি সিনহা বলেন, আমি প্রথম থেকে বলে এসেছি গোপালপুর বারুদের স্তুপে পরিণত হয়েছে। প্রচুর পরিমাণ সংখ্যক বোমা মজুত করা হয়েছে গোপালপুরে। আর তা সম্ভব হয়েছে পুলিশ প্রশাসন ও শাসকদলের নেতাদের মদতেই।