উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংকাণ্ডে মৃত পড়ুয়ার বাড়িতে গেলেন তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। এদিন মৃত পড়ুয়ার নদিয়ার বাড়িতে যান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু, অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শশী পাঁজা এবং তৃণমূল যুব রাজ্য সভানেত্রী সায়নী ঘোষ।
এদিন মৃত ছাত্রের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি দেখছেন। ছেলের মৃত্যুর বিচার পাবেনই। দোষীদের কেউ ছাড় পাবেন না’। এদিন মৃতের মা কাঁদতে কাদতে বলেন, ‘‘যাদবপুরে পড়তে চাইত ছেলে। বলত, ওখানে ভর্তি করাবে তো মা?’’
বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই এই প্রতিনিধি দল নদিয়া যান বলে সাংবাদিকদের বলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এদিন নদিয়ায় যাওয়ার আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মূলত মৃত ছাত্রের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে এবং তৃণমূল কংগ্রেস যে তাদের পরিবারের পাশে রয়েছে সেই বার্তা দিতেই নদিয়া যাত্রা’। তিনি যাদবপুর নিয়ে আরও বলেন, ‘যাদবপুরের একাংশের প্রবণতা হয়ে গিয়েছে স্ট্যালিন-মাওয়ের নাম করে যেন কাউকে খুন করে দেওয়া যায়, ছাত্রকে ওপর থেকে ফেলে দেওয়া যায়। সেখানে নৈরাজ্যকর অবস্থা। এর বাইরেও যাদবপুরের ছাত্রদের অনেকেরই আমাদের দলনেত্রীর প্রতি ভালবাসা আছে, সেই সব ছাত্রের ওপরেই আক্রমণ হচ্ছে, এবার এদিকে তাকানোর সময় এতদিনে এসে গিয়েছে’।
অন্যদিকে তিনি আঙুল তোলেন ‘হোক কলরব’ দিকে। এপ্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বছর ছয়েক আগে ‘হোক কলরব’ এর নেতৃত্বরা আজ কোথায়? এতবড় ঘটনা ঘটার পরও এই সংগঠনের নেতৃত্বদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি কোন দরদ নেই, নেই পড়ুয়াদের প্রতি ভালবাসা, শিক্ষকদের প্রতি না আছে কোন শ্রদ্ধাবোধ, এমনকি উপাচার্যের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ টুকুও নেই। একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক ভাবে বিভিন্ন মতামত থাকতেই পারে তবে কোন ছাত্র গ্রাম থেকে পড়তে এলে তার ওপর অত্যাচার করা এটা কোনও শিক্ষাঙ্গনের নিয়ম হতে পারেনা’।
বর্তমানে আতসকাচের তলায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা। আজ দুপুর ৩ টে নাগাদ লালবাজারে তলব করা হয়েছে ডিন অফ অফ স্টুডেন্টস রজত রায় ও রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসুকে। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় পুলিশ। যে সমস্ত বিষয় গুলিকে সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন তারা সেগুলি হল, ইউজিসি-র নির্দেশিকায় থাকলেও হস্টেল ও ক্যাম্পাসে কেন নেই সিসি ক্যামেরা? মেন হস্টেলে অন্তত ২০ জন প্রাক্তনী থাকতেন, এই অনিয়মে কেন উদাসীন ছিল কর্তৃপক্ষ? বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেল কি বিনা পয়সার গেস্ট হাউস? বহিরাগতদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢোকার ক্ষেত্রে কেন নেই কড়াকড়ি? বর্তমান ও প্রাক্তনী মিলিয়ে মোট ৬ জন পড়ুয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। যাদবপুরকাণ্ডে হেনস্থার ভিডিও হাতে পেতে ফরেন্সিক ও প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে কলকাতা পুলিশ।