ময়নাগুড়ি: ছন্দ মিলিয়ে কখনও মহিলা কণ্ঠে সাবলীলভাবে কথা বলেন, আবার কখনও বা পুরুষ কণ্ঠে। এই ক্ষমতাকেই কাজে লাগিয়েই রোজগারের পথ বেছে নিয়েছেন বিশেষভাবে সক্ষম কৃষ্ণ সেন। ময়নাগুড়িতে ভ্যানরিকশায় চেপে মাইক্রোফোন (Microphone) হাতে নিয়ে এভাবেই লটারির (Lottery) টিকিট বিক্রি করেন তিনি।
ময়নাগুড়ি পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ড ফার্ম শহীদগড় পাড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণ সেন (৬৬)। তাঁর ডান হাতে এবং দু’পায়ে সমস্যা রয়েছে। হাঁটতেও বেশ কষ্ট হয়। নিজের বসবাসের জন্য থাকার জায়গাটুকুও নেই। আসলে দারিদ্রতা আর শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় নিজের মাথা গোঁজবার ঠাঁইটাও গড়ে তুলতে পারেননি। অগত্যা শহরের অদূরে বর্তমানে নিজের শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রী পুত্রকে নিয়ে বসবাস করছেন। শহরের বাড়িতে ৩ ভাই রয়েছেন। তাঁরাও সকলেই বিশেষভাবে সক্ষম।
শহর এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় কেবলমাত্র দিনের বেলায় লটারির টিকিট (Ticket) বিক্রি করেন কৃষ্ণ। সঙ্গী পুরোনো একটি ভ্যান রিকশা। মাইক সেটটাও নিজেই কিনেছেন। অসাধারণ ছন্দ মিলিয়ে কথা বলেন। নিজের জীবনের সুখ দুঃখের কথা বলেন ছড়া কেটে। মাইক্রোফোনে কখনও মহিলা আবার কখনও পুরুষের কন্ঠে সাবলীল ভাবে কথা বলে লটারির টিকিট বিক্রি করেন। এক হাতে মাইক্রোফোন, অন্য হাতে ভ্যানরিকশা চালিয়ে ঘোরেন পথে পথে। রোজগার হয় দিনে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। তাতেই সংসার চালিয়ে নিতে হয়। কৃষ্ণ সেনের আবেদন, ‘আমাকে সরকার যদি একটা ঘরের বন্দোবস্ত করে দেয় তাহলে আমি উপকৃত হতাম। শ্বশুর বাড়িতে দিন কাটাতে হতনা। বাবার ভিটেতে আমার জায়গা পড়ে আছে। ঘর বাঁধার কোনও সামর্থ্য নেই। পেট চলে না। বিশেষভাবে সক্ষমের শংসাপত্র (Certificate) রয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন চৌধুরী বলেন, ‘ওঁদের বাবা প্রয়াত কার্তিক সেন শিক্ষক ছিলেন। ছেলেরা সকলেই বিশেষভাবে সক্ষম। খুবই কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছেন।’