কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন জায়গায় শুরু হয়েছে অশান্তি। ভোট পর্ব মিটে গেলেও এখনও অশান্তির বিরাম নেই। ভোট পরবর্তী অশান্তি চলছে দিকে-দিকে। রাজ্যের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। এই পরিস্থিতিতে ভোট লুঠ সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা কমিশনের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করলেন। বিচারপতি বলেন, ‘অশান্তি ও মৃত্যুর ঘটনা যে ঘটছে তা কমিশন অস্বীকার করতে পারবে? একজন প্রার্থী ৫ বছর ধরে কাজ করার পর জিততে এভাবে অশান্তি করতে পারেন?’। বিচারপতির সিনহার কথায়, ‘আসলে প্রচুর টাকার লেনদেন। তাই ক্ষমতা দখলের জন্যই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।’
পঞ্চায়েত ভোটের গণনার দিন রিটার্নিং অফিসারের সই করা প্রচুর ব্যালট পেপার রাস্তায় গড়াগড়ি খেতে দেখা যায়। এনিয়ে মামলা দায়ের হয় আদালতে। তারই ভিত্তিতে এদিন সংশ্লিষ্ট বুথের রিটার্নিং অফিসার এবং প্রিসাইডিং অফিসারকে আদালতে ডেকেছিলেন বিচারপতি। তাঁদের কাছে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই মামলায় আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতকে জানান, গণনার সময় এই ঘটনা ঘটেছিল। কমিশনের কাছে অভিযোগ জমা দেওয়া হলেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। পালটা কমিশনের আইনজীবী আদালতকে জানায়, উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মামলা করা হয়েছে। কারণ এটা ইলেকশন পিটিশন নয়। নির্বাচন শেষ হয়ে গিয়েছে।
কমিশনের আইনজীবীর কাছে বিচারপতির প্রশ্ন, ‘এই এজলাসে যেটা বলছেন সেটা প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জানিয়েছিলেন?’ জবাবে কমিশন জানায়, ‘অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। তাই জানানো হয়নি।’ অভিযোগের ভিত্তিতে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে? বিচারপতি জানতে চাইলে কমিশনের ব্যাখ্যা, ‘এই ঘটনার সত্যতা হয়তো আছে, কিন্তু ১০০০ ব্যালটের মধ্যে ৪০০ ব্যালট ব্যবহার করা হয়নি। সেটা রিটার্নিং অফিসারের কাছে ফিরে আসে। এগুলো সেই ব্যবহার না করা ব্যালট।’ কমিশনের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘রাজ্যের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রার্থীরা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে, এটাই স্বাভাবিক।’ বুথের ভেতরের ও বাইরের সিসিটিভির ফুটেজ রেজিষ্টার জেনারেলের কাছে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি। হাইকোর্টের বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং রেজিস্টার জেনারেলের বিশেষজ্ঞ টিম সেই ফুটেজ খতিয়ে দেখে আদালতে রিপোর্ট জমা দেবে। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে আগামী ২৬ জুলাই।