নাগরাকাটা: বৃহস্পতিবার থেকে ফের খুলে যাচ্ছে ক্যারন চা বাগান। কলকাতার বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক ১০ শতাংশ হারের বোনাস সেখানে ২১ অক্টোবরের মধ্যে দেওয়া হবে। পুজোর ছুটির অবকাশেও মালবাজারের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনারের অফিস খুলে বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যে পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে ক্যারনের জট খোলে। জলপাইগুড়ির ডেপুটি লেবার কমিশনার শুভাগত গুপ্ত বাগানটি খোলাতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শ্রম দপ্তরের এই হস্তক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছে শ্রমিকরা। ডেপুটি লেবার কমিশনার বলেন, পুজোর আগে বাগানটি ফের স্বাভাবিক হচ্ছে এর থেকে ভাল খবর আর কিছু হতে পারে না।
জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে ঠিক হয়েছে শ্রমিকদের সর্বশেষ যে মজুরিটি বকেয়া রয়েছে সেটাও ২১ অক্টোবরের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে। বাগানের উন্নয়নে শ্রমিক-মালিক একজোট হয়ে কাজ করার সিদ্ধান্তও এদিন নেওয়া হয়। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি সঞ্জয় কুজুর বলেন, কিছু সমস্যার কারনে ক্যারন বাগান বন্ধ হয়েছিল। তা দূর হয়ে যাওয়ায় আমরা প্রত্যেকেই খুশি। বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় টি ওয়ার্কাস ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারন সম্পাদক সন্তোষ হাতি বলেন, বৈঠকের ফলাফলকে স্বাগত জানাই। পুজোর আগে বাগান বন্ধ থাকবে এটা মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না।
এর আগে বোনাস ইস্যুকে কেন্দ্র করেই গত মঙ্গলবার ক্যারনে কর্মবিরতির নোটিশ জারি করে পরিচালকরা বাগান ছেড়ে চলে যান। শ্রমিকরা সেখানে বেশি হারের বোনাসের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। এদিনের বৈঠকে ছিলেন জলপাইগুড়ির সহকারী শ্রম কমিশনার প্রদীপ তামাং, বাগানের ম্যানেজার সুনীল সিং, মালিকপক্ষের সংগঠন ডিবিআইটিএ-র প্রতিনিধি।
অন্যদিকে, কেন্দ্রের ভারী শিল্প মন্ত্রকের অধীনস্থ সংস্থা অ্যান্ড্রিউ ইউলের বানারহাটের ৪টি চা বাগানেই ১৯ শতাংশ হারের বোনাস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বানারহাট, কারবালা, নিউ ডুয়ার্স ও চুনাভাটি চা বাগান মিলিয়ে ৮ হাজার শ্রমিক বোনাসের টাকা তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মারফত পেয়ে গিয়েছেন। ৪ বাগানের গ্রুপ হেড তমাল গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘একেকজন শ্রমিক গড়ে ১৩-১৪ হাজার ও কর্মচারীরা ৩০-৪০ হাজার টাকা বোনাস পেয়েছেন।
এদিকে মেটেলির নাগেশ্বরী চা বাগানে বোনাস নিয়ে জটিলতা চলছিল। শ্রম দপ্তর জানিয়েছে, সেখানে সমস্যা মিটে গিয়েছে। মেরিকো ও সম্মেলন গোষ্ঠীর পরিচালনাধীন নাগেশ্বরী সহ ডুয়ার্সের ১১টি চা বাগানেই বুধবার ১১.৫ শতাংশ হারের বোনাস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি বাগানগুলি হল বাগরাকোট, মানাবাড়ি, কিলকোট, বান্দাপানি, বীরপাড়া, গারগান্ডা, তুলসীপাড়া, হান্টাপাড়া, ধূমচিপাড়া ও কোহিনুর। ওই গোষ্ঠীর কর্ণধার সুরজিত বক্সী বলেন, চুক্তি মোতাবেক বোনাস দেওয়া হয়েছে। শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণই আমাদের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। অন্যদিকে মেটেলির ছাওয়াফেলি চা বাগানের বোনাস সমস্যা এখনো কাটেনি। ১৯ শতাংশ হারের বোনাসের দাবিতে এদিনও সেখানকার শ্রমিকদের গেট মিটিং সপ্তম দিনে পড়ল।