নীহাররঞ্জন ঘোষ, মাদারিহাট: জাতিগত শংসাপত্র (Caste certificate) নিয়ে জালিয়াতিচক্রের হদিস পাওয়া গেল কালচিনি (Kalchini) ব্লকের পুরাতন হাসিমারায় (Hasimara)। তদন্তে জানা গিয়েছে, মাদারিহাট উত্তর খয়েরবাড়ির জনৈক তরুণী জাতিগত শংসাপত্র বের করতে গিয়ে ২৭ ডিসেম্বর এক তরুণের কাছে প্রতারণার শিকার হন। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারের মহকুমা শাসক বিপ্লব সরকার ঘটনার কথা জানতে পেরে তড়িঘড়ি তরুণীকে নিয়ে কালচিনি ব্লকের পুরাতন হাসিমারায় আসেন। ওই তরুণী মহকুমা শাসককে সাঁতালি মোড়ের কাছে প্রতারকের বাড়ি চিনিয়ে দেন। সেইসময় প্রতারককে বাড়িতে পাওয়া না গেলে মহকুমা শাসক তার বাড়ির কাছেই একটি কম্পিউটারের দোকানে তল্লাশি চালিয়ে হার্ডডিস্ক খুলে নিয়ে যান।
বিপ্লব জানান, হার্ডডিস্ক পরীক্ষার পর আরও অনেক তথ্য পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘চক্রের পান্ডাদের ধরতে তল্লাশি অভিযান চালানো হবে। ধরা পড়লে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু হবে। কেউ ছাড় পাবে না।’ শুধু কালচিনি নয়, মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকেও এই ধরনের চক্র রয়েছে বলে তিনি জানান। হাসিমারা পুলিশ ফাঁড়ির ওসি বিশ্বজিৎ দে বলেন, ‘এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
তরুণী জানান, জাতিগত শংসাপত্র বের করতে গিয়ে এক বন্ধু মারফত ওই প্রতারকের সঙ্গে তঁার পরিচয় হয়। সার্টিফিকেট বের করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তঁার কাছে ওই তরুণ মোট ৮ হাজার টাকা দাবি করে। তরুণী প্রথম অবস্থায় তাকে ৪ হাজার টাকা দেন। এরপর গত ২৭ ডিসেম্বর জাতিগত শংসাপত্র পাঠিয়ে ওই তরুণ তঁার কাছ থেকে বাকি ৪ হাজার টাকা নেয়। শংসাপত্র হাতে পেয়ে ওই তরুণী দেখেন, তঁার ঠিকানার জায়গায় ভুল তথ্য দেওয়া রয়েছে। তঁার বাড়ি মাদারিহাটে হলেও ঠিকানায় রয়েছে কালচিনি ব্লকের পুরাতন হাসিমারার সাঁতালি চা বাগান। তিনি শংসাপত্র সংশোধন করার কথা বলতেই প্রতারক বলে, এ ব্যাপারে তার কিছুই করার নেই। এমনকি তাকে যেন এইসব বিষয় নিয়ে আর ফোন করা না হয়। শুক্রবার বাধ্য হয়ে ঠিকানা সংশোধনের জন্য ওই তরুণী আলিপুরদুয়ার যান। তাঁর শংসাপত্র দেখেই সন্দেহ হয় সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মীদের। তঁারা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মহকুমা শাসককে জানান।
মহকুমা শাসক এদিন সবাইকে সতর্ক করে বলেছেন, ‘কাস্ট সার্টিফিকেট পাওয়ার প্রথম শর্তই হল, যিনি যে এলাকার বাসিন্দা তাঁকে সেই এলাকা দিয়েই আবেদন করতে হবে। এক জায়গায় বাস করে অন্য এলাকার ঠিকানা দিয়ে শংসাপত্রে আবেদন সম্পূর্ণ অবৈধ।’