সৌম্যজ্যোতি মন্ডল, চাঁচলঃ চাঁচল হাসপাতালের দ্বিতীয় তলায় মহিলা ওয়ার্ডে রোগীদের শৌচালয়ে ঘাপটি মেরে লুকিয়ে ছিলেন এক ব্যক্তি। মহিলারা বাথরুমে গেলে ফোন দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করছিলেন। হঠাৎ এক মহিলার নজর পড়ে যায়। তারপর অন্যান্য রোগীদের ডাকাডাকি করতে গেলে উধাও হয়ে যায় ওই ব্যক্তি। মঙ্গলবার গভীর রাতে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়াল চাঁচল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগে প্রশ্ন চিহ্নের মুখে হাসপাতালের নিরাপত্তা।
জানা গিয়েছে, শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারণে মঙ্গলবার চাঁচল হাসপাতালে ভর্তি হন হরিশ্চন্দ্রপুরের সুলতান নগরের এক মহিলা। দ্বিতীয় তলায় মহিলা ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। ঘড়ির কাটায় তখন প্রায় রাত ১২.০০। শৌচালয়ে যান ওই মহিলা। হঠাৎ তাঁর নজরে আসে শৌচালয়ের ভেতরে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি লুকিয়ে রয়েছে। ফোন দিয়ে ভিডিও রেকর্ড করার চেষ্টা করছে। প্রথমে ওই মহিলা রোগী ভিডিও রেকর্ড করতে বাধা দেন। তারপর চিৎকার করে অন্যান্য মহিলা রোগীদের ডাকতে গেলে অভিযুক্ত সিড়ি বেয়ে নেমে পালিয়ে যায়।
এদিকে এই ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যাপক শোরগোল ছড়িয়ে পড়ে হাসপাতালে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন অন্যান্য মহিলা রোগীরা। রোগীদের আশঙ্কা ওই ব্যক্তি হয়তো অনেকক্ষণ ধরেই বাথরুমে ঘাপটি মেরে ছিলেন। অনেকের ভিডিও রেকর্ড করেছেন। এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীদের পরিবারের লোকেরা। প্রশ্ন উঠেছে হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়ে। কিভাবে সকলের চোখ এড়িয়ে মহিলা ওয়ার্ডের বাথরুমে ঢুকে পড়লেন ওই ব্যক্তি। কতটা সজাগ ছিলেন নিরাপত্তারক্ষীরা। উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
এদিকে বুধবার রোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং চাঁচল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। রোগীদের পরিবারের লোকেদের দাবি দ্রুত ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হোক। বাজেয়াপ্ত করা হোক তার মোবাইল। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। এক অভিযোগকারী বলেন,”আমার মা ভর্তি ছিল হাসপাতালে। রাত প্রায় ১২ টা তখন শৌচালয় তে গিয়ে ওই ব্যক্তিটিকে দেখতে পান। হয়তো অনেকক্ষণ ধরেই ওইভাবে ঘাপটি মেরেছিল। খুব আতঙ্কের বিষয়। দ্রুত গ্রেপ্তার করা হোক।”
এক মহিলা রোগী জানান,” কে জানে কতক্ষণ ধরে ছিল মহিলাদের শৌচাগারে লুকিয়েছিল অভিযুক্ত। কত জনের যে ভিডিও রেকর্ড করেছে। আমি তো তার কিছুক্ষণ আগেই শৌচালয়ে গেছিলাম। আতঙ্কে আমাদের ঘুম হয়নি রাতে।”
চাঁচল হাসপাতালের সহকারি সুপার ত্রিদিপ মাইতির বক্তব্য,”রোগীরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত করেছে। আমরা ফুটেজ থানায় জমা দিয়েছি। খুব লজ্জাজনক ঘটনা। আমাদের নিরাপত্তা রক্ষীরা রাতে টহল দেয়। তার মাঝেও কিভাবে হল, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি আমরা।” চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে তদন্ত শুরু হয়েছে। দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।