চাঁচল: চাঁচলে (Chachol) নির্ধারিত সময় থেকে দেরিতে শুরু হয় মিঠুনের রোড শো। তারপরেও তীব্র তাপপ্রবাহ উপেক্ষা করে রাস্তায় অপেক্ষারত লক্ষাধিক মানুষ। মাঝপথে তৃণমূলের (TMC) গো ব্যাক স্লোগান। গণ্ডগোল এড়াতে রোড শো বন্ধ করে দেন মিঠুন। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অসৌজন্যতার অভিযোগ তোলে বিজেপি। এদিকে, দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও মিঠুনকে দেখতে না পেয়ে চূড়ান্ত হতাশ চাঁচলের বাসিন্দারা।
বুধবার মালদা উত্তরে বিজেপি (BJP) প্রার্থী খগেন মুর্মুর (khagen murmu) সমর্থনে চাঁচল বিধানসভায় রোড শো করতে আসেন অভিনেতা তথা বিজেপি নেতা মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। কলিগ্রাম পঞ্চায়েতের সামনে থেকে দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা ছিল মিঠুনের রোড শো। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পরে শুরু হয় এই রোড শো। রাস্তার দু’ধারে বাড়ির ছাদ থেকে শুরু করে মাঠে, আম বাগানে বহু মানুষ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে মিঠুনকে এক ঝলক দেখার জন্য। বিকেল চারটা নাগাদ কলিগ্রামে বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদান করে রোড শো শুরু করেন মিঠুন। সবকিছু বেশ ভালই চলছিল। কাতারে কাতারে মানুষ ছবি তোলার জন্য রাস্তার দুই ধারে হামলে পড়ছিল। উৎসবের মেজাজ ছিল বিজেপির এই মিছিলে। ভোটের আগেই যেন আগাম বিজয় উৎসব। ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছিল পুলিশকে। বেশ খোশমেজাজে দেখা যাচ্ছিল মিঠুনকেও। ভোটারদের উদ্দেশ্যে হাত নাড়ছিলেন মহাগুরু। রাস্তার চারধার থেকে পুষ্পবৃষ্টি হচ্ছিল। উঠছিল শঙ্খধ্বনি। কিন্তু প্রায় দুই কিলোমিটার রোড শো এসে তাল কাটে চাঁচলের তরলতলা মোড়ে। প্রায় ২০ থেকে ২৫ জন তৃণমূলের স্থানীয় নেতাকর্মী দলীয় পতাকা হাতে গো ব্যাক শ্লোগান দিচ্ছিলেন মিঠুনকে। পালটা শ্লোগান শুরু হয়েছিল বিজেপির তরফ থেকে। মিঠুন বুঝতে পারেন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে পারে। রোড শো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সটান গাজোলে চলে যান তিনি।
অন্যদিকে, সেই সময় চাঁচলস্ট্যান্ড দক্ষিণপাড়া থেকে শুরু করে পাহাড়পুর পর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষ অপেক্ষা করছিলেন মিঠুনকে দেখার জন্য। প্রত্যেকেই তীব্র রোদে দীর্ঘ কয়েক ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছিলেন। মিঠুনকে দেখতে না পেয়ে তারা চূড়ান্ত হতাশ হয়ে যান। তাদের দাবি, যারা এই রোড শোতে ব্যাঘাত ঘটাল তারা অত্যন্ত নোংরা রাজনীতির নিদর্শন রাখল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হওয়ার হুঁশিয়ারি দেয় বিজেপি। যদিও বিক্ষোভে উপস্থিত স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, এটা কোনও দলীয় কর্মসূচি ছিল না। নাগরিকদের হয়ে তারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন। কারণ সাংসদ পাঁচ বছর এলাকায় আসেননি।আর আজ মিঠুনকে নিয়ে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করছেন। যদিও বাস্তবে দেখা যায় মিঠুন যতক্ষণ রোড শো করেন রাজনীতি এবং ধর্মের বেড়াজালের বাইরে শুধু মহাগুরুর আকর্ষণে রাস্তায় নেমেছিল মানুষ। অন্যদিকে রোড শো চলাকালীন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মিঠুন বলেন, ‘রাজ্যজুড়ে নৈরাজ্যের সৃষ্টি হয়েছে। তা উৎখাত করতে মানুষ আজ স্বতঃস্ফূর্তভাবে পথে।‘ বিজেপি প্রার্থী খগেন মুর্মুর অভিযোগ, তৃণমূল কোনও গণতন্ত্রের তোয়াক্কা করে না। প্রচণ্ড অসভ্য একটা দল। চাঁচলের মানুষ আজ সেটা দেখল।
বিক্ষোভকারী চাঁচল-১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ অঙ্কুর পোদ্দার বলেন, ‘এটা তৃণমূলের বিক্ষোভ না। আমরা নাগরিকদের হয়ে বিক্ষোভ করছি। পাঁচ বছর কোনও কাজ না করে এরা বিভাজনের রাজনীতি করতে এসেছে।