গজলডোবা: ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডকে কেন্দ্র করে ‘আমরা-ওরা’র অভিযোগ আগেই উঠেছিল। বাস্তবে হলও তাই। রাজ্য সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের ছাড়াই গত ৪ অক্টোবরের বিপর্যয়ের পর সোমবার তিস্তা অববাহিকার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করলেন ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিআর দাস, ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ার রঞ্জিত ডেকা প্রমুখ। জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত রায়ের অনুরোধে এদিন ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডের ইঞ্জিনিয়াররা টাকিমারি, নিমতলা, আপালচাঁদ, চ্যাংমারি, বাসুসুবা প্রভৃতি এলাকায় তিস্তার সাম্প্রতিক প্লাবনে ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে কী করণীয় তা খতিয়ে দেখেন। তাঁদের এই পরিদর্শনে রাজ্য সেচ দপ্তরের কোনও আধিকারিককে দেখা যায়নি। বিষয়টি নিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিআর দাস কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে তিনি বলেছেন, ‘জলসম্পদ রাজ্যের সাবজেক্ট। রাজ্যের সম্মতি পেলে কেন্দ্র কাজ করতে পারে। তিস্তার ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য সেচ দপ্তর কী ভাবছে সেটাও জানা জরুরি।’ এদিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখার পর একটি রিপোর্ট উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পরবর্তীতে তাঁদের নির্দেশমতো কাজ হবে।
লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে বিজেপি তিস্তার সাম্প্রতিক বিপর্যয় পরিস্থিতির সুযোগ নিতে চাইছে বলে তৃণমূলের অভিযোগ উড়িয়ে সাংসদ ডাঃ জয়ন্ত রায় বলেন, ‘মানুষের প্রয়োজনে উন্নয়নমূলক কাজ নিয়ে রাজনীতি হোক তা চাই না। তবে তিস্তার জলস্ফীতির ফলে গত দু’বছর ধরে বাগ্রাকোট গ্রাম পঞ্চায়েতের টোটগাঁওয়ের ভাঙন সহ গত ৪ অক্টোবরের তিস্তা বিপর্যয়ের পর থেকে জেলা শাসক থেকে শুরু করে সেচ দপ্তরের আধিকারিকদের কাছে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কী জরুরি বলে একাধিকবার জানতে চেয়েও কোনও জবাব পাইনি।’
উল্লেখ্য, ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডের আধিকারিকদের তিস্তা অববাহিকার এই পরিদর্শন নিয়ে তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলার সভানেত্রী মহুয়া গোপ গতকালই প্রশ্নও তুলেছিলেন। ব্রহ্মপুত্র নদী বোর্ডের চিফ ইঞ্জিনিয়ারের এদিনের পরিদর্শন কালে তিস্তা ব্যারেজের বাঁহাতি বাঁধ প্রবল জলস্রোতে নিশ্চিহ্ন হওয়ার জায়গাটি ঘুরিয়ে দেখান গোবিন্দ বিশ্বাস, বৃন্দাবন সরকার প্রমুখ বাসিন্দারা। কয়েক হাজার বিঘা কৃষিজমি ও ঘরবাড়ি ভেসে যাওয়া ঠেকাতে ব্যারেজ থেকে পাঞ্জাবি স্পার পর্যন্ত সাড়ে তিন কিমি দীর্ঘ নদীবাঁধ তৈরির দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন। গজলডোবার পর চাঁপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতে ফি বছর বর্ষায় তিস্তার জল ঢুকে জলমগ্ন হওয়ার পরিস্থিতিও ঘুরে দেখে প্রতিনিধিদলটি।