কলকাতা: ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে প্রতারণাকাণ্ডে দলীয় সাংসদ নুসরত জাহানের পাশেই দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মমতা বলেন, ‘আমি এবিষয়ে এখানে আলোচনা করতে চাই না। এটা ওঁদের কী ব্যাপার আমি জানি না। না জেনে কোনও মন্তব্য করা ঠিক হবে না।’ এরপরই মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘কেউ গিয়ে কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেই পারে। অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার আগে সংবাদমাধ্যমের দ্বারা দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া হল। অভিযোগ আগে দেখুন সত্যি কিনা। ইডি-সিবিআই যেটা বলল এক তরফা। অভিযোগের সত্যতা থাকলে আইন আইনের পথে চলবে। নুসরত যদি কোথাও ডিরেক্টর হয়ে থাকে, ওরম ডিরেক্টর তো অনেক রয়েছে। নিজের জন্য লড়াই করার অধিকার সকলের আছে। আমি না জেনে এটা নিয়ে কোনও কথা বলব না।’
উল্লেখ্য, ফ্ল্যাট দেওয়ার নামে কোটি কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে। বুধবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সাফাই দিয়েছেন তিনি। এবার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নুসরতের বিরুদ্ধে প্রায় ২৪ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ নিয়ে সোমবার ইডির দ্বারস্থ হয়েছিলেন বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা। পরে রাজ্যের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও সেই অভিযোগকে সমর্থন করেন। গতকাল বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা বেশ কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তিকে নিয়ে ইডি অফিসে যান। সেখানে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করে জানান, ২০১৪ সালে ৪২৯ জনের কাছ থেকে ফ্ল্যাট দেওয়ার নাম করে টাকা নিয়েছিল নুসরতের সংস্থা। রাজারহাটে হিডকোর দপ্তরের কাছে তিন বছরের মধ্যে এই ফ্ল্যাট দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু প্রায় ১০ বছর হতে চললেও সেই ফ্ল্যাট তাঁরা পাননি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, বিরাট দুর্নীতি হয়েছে। ওই টাকায় ১ কোটি ৫৫ লক্ষ দাম দিয়ে ফ্ল্যাট কিনেছেন নুসরত। অভিযোগের যথেষ্ট সারবত্তা রয়েছে। ইডিকে সব তথ্য দিয়ে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ইডি পদক্ষেপ না করলে তাঁরা মামলার পথে হাঁটবেন।
যে নাগরিকেরা ইডি-র কাছে গিয়েছিলেন, তাঁরা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন, নুসরতের সঙ্গে ওই সংস্থার যৌথ ডিরেক্টর রাকেশ সিংহ নামের এক ব্যক্তি। তিনিই ফ্ল্যাট পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতারিতরা গড়িয়াহাট থানায় অভিযোগও দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বসিরহাটের তৃণমূল সাংসদকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানান শঙ্কুদেব। নুসরত প্রথমে জানিয়েছিলেন, যেহেতু এটি আইনি বিষয়, তাই আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি জবাব দেবেন। এরপরই বুধবার সাংবাদিক বৈঠক ডাকেন তিনি। বৈঠকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন। যদিও সাংবাদিকদের কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিতে চাননি নুসরত। বরং মেজাজ হারিয়ে সাংবাদিক বৈঠক থেকে বের হয়ে যান তিনি। এরপরই নুসরতের হয়ে ব্যাট ধরেন মমতা।