সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: বলা হয়, দিনের শুরু বলে দেয় সারাদিনটা কেমন যাবে? শনিবার সকালও বলে দিয়েছিল বাকি দিনটা কেমন যেতে পারে। সকাল ন’টাতেই মনে হচ্ছিল দুপুর দুটো বেজে গিয়েছে। প্রয়োজন ছাড়া কেউই সেরকম বাইরে বেরোননি। যাঁরা বাইরে বেরিয়েছিলেন, এই অসহনীয় পরিস্থিতিতে একটু হলেও রক্ষা পেতে ভরসা করেছিলেন জল, ডাব(Coconut) এবং আখের রসে।
আখের রসের দাম না বাড়লেও ডাবের দাম শুনে ছ্যাঁকা লেগেছে অনেকেরই। কিন্তু রোদের ছ্যাঁকা খেয়ে ক্লান্ত শহরবাসী ডাবের ছ্যাঁকা খাওয়াকেই শ্রেয় বলে মনে করেছেন। এদিন হাসমি চকে কাজের ফাঁকে কয়েকজন ট্রাফিক পুলিশকর্মীকে ডাবের জলে গলা ভেজাতে দেখা গেল। তাঁদের কথায়, দাম একশো টাকা হয়েছে। কিন্তু এই গরমে চড়া রোদে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কাজ করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। তাই আপাতত টাকার মায়া না বাড়িয়ে ডাবের জল পান করছেন।
ডাব বিক্রেতাদের একাংশের কথায়, চারদিনে যত ডাব বিক্রি হয়েছে, শনিবারের বারবেলায় একদিনে সেই ডাব বিক্রি হয়েছে। একটি ডাবের দাম ছুঁয়েছে একশো টাকাও। তারপরেও ডাবের জলে গলা ভিজিয়েছেন শহরবাসী।
শিলিগুড়ির(Siliguri) এসএফ রোড, বর্ধমান রোড, সেবক রোড, চম্পাসারি সহ বিভিন্ন জায়গায় ডাব বিক্রি হয়। প্রতিটি বাজারে এদিন ৭০ থেকে ১০০ টাকায় ডাব বিক্রি হয়েছে। চম্পাসারি এলাকায় ডাব বিক্রি করেন রাকেশ ঠাকুর, মহম্মদ সাব্বিররা। রাকেশ বললেন, ‘এক সপ্তাহে যত ডাব বিক্রি হয়েছে, সেটা একদিনে বিক্রি করেছি। প্রচুর চাহিদা থাকলেও সেই অনুযায়ী সরবরাহ নেই। আকার অনুযায়ী দামের পার্থক্য। সেই কারণে দাম বেড়েছে। তবে এবছর অত্যধিক গরমের জন্য অনেক আগে থেকে ডাবের চাহিদা বেড়েছে।’
জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও কোচবিহার জেলা থেকে সাধারণত শিলিগুড়িতে সিংহভাগ ডাব আসে। ব্যবসায়ীদের কথায়, যত গরম পড়বে, ডাবের দামও সেইমতো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শহরের বিভিন্ন জায়গায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে পথচলতিদের মধ্যে ঠান্ডা পানীয় বিতরণ করতে দিতে দেখা গিয়েছে। শিলিগুড়ি হিলকার্ট রোড, এসএফ রোড, মিলনপল্লির মতো জায়গায় অনেকে এমন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এসএফ রোডে পথচলতিদের ঠান্ডা পানীয়র গ্লাস এগিয়ে দিচ্ছিলেন বিকাশ শা, সবিতা কুমারীরা। সবিতার বক্তব্য, ‘এই গরমে অনেকে রাস্তাঘাটে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সে কারণে এই উদ্যোগ। শুনলাম, অন্য জায়গাগুলোতেও এরকম উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’