রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: নিবেদিতা রোডের দু’ধারে পার্কিং জোন তৈরি করে টেন্ডার ডেকে বরাত দেওয়া হয়েছে। পার্কিং ফি আদায়ও করা হচ্ছে। অথচ স্থানীয় দুই কাউন্সিলার এই বিষয়ে কিছুই জানেন না। তাঁদের কাছে অভিযোগ পেয়ে মেয়র গৌতম দেব নিবেদিতা রোডের পার্কিং জোন নিয়ে হস্তক্ষেপ করেন। তাঁর নির্দেশে বুধবার থেকে পার্কিং ফি নেওয়া বন্ধ হয়। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কার, কীসের স্বার্থে পরিস্থিতি বিচার না করে যে কোনও জায়গায় পার্কিং জোনের টেন্ডার দেওয়া হচ্ছে? স্থানীয় কাউন্সিলারকেও কেন জানানো হচ্ছে না?
পার্কিং বিভাগের মেয়র পারিষদ রাজেশ প্রসাদ শা বলেন, ‘নিবেদিতা রোডে পার্কিং জোন করার সিদ্ধান্ত অনেক আগেই হয়েছিল। হয়তো স্থানীয় কাউন্সিলারদের সেটা জানা নেই। এতদিন কোনও এজেন্সি টেন্ডারে অংশ নেয়নি। কয়েকদিন আগেই আমরা টেন্ডার করে এজেন্সি নিয়োগ করেছি। কিন্তু গুরুংবস্তিতে রাস্তা চওড়া করার কাজ শুরু হওয়ায় আমরা আপাতত পার্কিং ফি নেওয়ার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।’
গুরুংবস্তি থেকে শুরু করে চম্পাসারি মোড় পর্যন্ত নিবেদিতা রোডের দু’পাশের একটা বড় অংশই দখল হয়ে রয়েছে। গোটা রাস্তায় ফুটপাথ বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। এরই মধ্যে গুরুংবস্তিতে রাস্তার একটি লেন দখল করে বহুদিন ধরে সবজি ও মাছ, মাংসের বাজার রয়েছে। মার্গারেট স্কুলের পর থেকে চম্পাসারি মোড় পর্যন্ত রাস্তার দু’পাশের ফুটপাথেরও একই অবস্থা। সবজি, ফল বাজারের পাশাপাশি প্রচুর দোকান ফুটপাথ ছাপিয়ে রাস্তায় এসে পড়েছে। তাহলে কোথা থেকে পার্কিং ফি তোলা হবে? এই ব্যবসায়ীদের অনেকেরই আশঙ্কা, বরাতপ্রাপ্ত এজেন্সি এসে টাকা দেওয়ার জন্য জোরাজুরি করবে। মহাবীরস্থান, বিধান রোডে যেভাবে তোলাবাজি চলছে, একইভাবে নিবেদিতা রোডেও হুজ্জতি করা হবে, ব্যবসায়ীদের এমনই আশঙ্কা।
চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই নিবেদিতা রোডে পার্কিং ফি আদায় করা হচ্ছে। কয়েকদিন পার্কিং নেওয়ার পরেই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ওই পার্কিং এজেন্সির গণ্ডগোল বাধে। অভিযোগ, নিজের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়ি রাখলেও টাকা দাবি করা হচ্ছে। ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার তথা ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান গার্গী চট্টোপাধ্যায় এবং ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার, মেয়র পারিষদ রামভজন মাহাতোর কাছে এই খবর পৌঁছায়। দুই কাউন্সিলারই এই পার্কিং জোনের ব্যাপারে কিছু জানতেন না। রামভজন বলেন, ‘আমাদের আগে জানানো হলে সবাই মিলে বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত। কিন্তু পার্কিং ফি তোলা শুরু হওয়ার পরে আমরা খবর পেয়েই বন্ধ করে দিয়েছি।’ গার্গী বলেন, ‘বিষয়টি জানার পরেই মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে পার্কিং ফি তোলা বন্ধ করেছি।’