মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: বরাদ্দের র্যাশন (Ration Distribution) না দিয়ে মাসের পর মাস গ্রাহকদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar)। এই অভিযোগে রবিবার আলিপুরদুয়ার শহরের রামকৃষ্ণপল্লির একটি র্যাশন দোকানে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন গ্রাহকরা। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করতে সোমবার খাদ্য দপ্তরের কর্তারা ওই দোকানে যান। দোকানের যে কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের অভিযোগ তাঁকে কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক বাবুলচন্দ্র ভক্ত বলেন, ওই র্যাশন দোকানের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে গ্রাহকদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, মালপত্র দিতে টালবাহানার অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি গ্রাহক পরিষেবা যাতে বিঘ্নিত না হয় সে ব্যাপারেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে গ্রাহকরা র্যাশনের সামগ্রী পাচ্ছেন না, শহরে অন্য কোথাও এমন কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে কেউ করেননি। যে কোনও অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা সুজিত মণ্ডল বলেন, র্যাশনের মালপত্র দিতে যেভাবে হয়রানি চলছিল, তাতে খুবই সমস্যা হত। এলাকায় অধিকাংশ গরিব মানুষ, তাঁদের অনেককে র্যাশনের অধিকার থেকে বঞ্চিত করার একটা চেষ্টা চলছিল। আমাদের প্রতিবাদের পর প্রশাসন তৎপর হয়েছে।
এদিকে অভিযোগ উঠেছে, শহরের কিছু র্যাশন দোকানের তরফে গ্রাহকদের চাল, আটা না দিয়ে, বিনিময়ে টাকা ধরিয়ে দেওয়া হয়ে থাকে। প্রতি কেজিতে ১৮-২০ টাকা দেওয়া হয়। তবে দু’পক্ষই সহমত থাকায় ওই লেনদেনের বিষয়টি খুব একটা প্রকাশ্যেও আসে না। এছাড়া র্যাশনের মাল কিনতে দোকানের আশপাশে কারবারিরাও অপেক্ষায় থাকেন। এক্ষেত্রে প্রতি কেজি চাল ২২–২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়। শহরের কলেজপাড়ার বাসিন্দা পীযূষকান্তি বসু বলেন, ‘আমি র্যাশন থেকে চাল এনে সেই চাল দোকানে ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করি। আবার অনেকে র্যাশন দোকানে চাল না নিয়ে প্রতি কেজি ২০ টাকা দরে বিক্রি করে দেয়। এতে মালটা বহন করার ঝামেলা থাকে না।’
সূত্রের খবর, শহরের বহু গ্রাহক র্যাশনের চাল, আটা তুললেও, সেটা নিজেরা খান না। অভিযোগ, কম দামে র্যাশনের সেই আটা ও চাল সংগ্রহ করে ভালো মুনাফা তুলতে তা বাইরে পাচার করে দিচ্ছেন শহরের কিছু ব্যবসায়ী। এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক তন্ময় সেনগুপ্ত বলেন, ‘র্যাশন দোকান থেকে মাল নিয়ে গিয়ে কেউ বাইরে বিক্রি করলে, সেটা আমাদের করার কিছুই থাকে না। আমাদের কাজ গ্রাহককে পরিষেবা দেওয়া, শহরের একটি দোকানে র্যাশন সামগ্রী বণ্টন নিয়ে সমস্যা হয়েছিল, সেই সমস্যা মেটাতে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করেছে।’ যদিও জেলা খাদ্য দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, কোনও র্যাশন দোকানদার গ্রাহকের কাছে র্যাশনের মাল কিনতে পারেন না, এ ধরনের অভিযোগও কেউ করেননি।