শিলিগুড়ি: রাজ্যের স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা নিয়োগ নিয়ে জটিলতা ক্রমশ বাড়ছে। সার্চ কমিটি তিনজনের নাম সরকারের কাছে পাঠিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী সেখান থেকেই একজনকে বেছে নেবে নবান্ন। কিন্তু যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেক প্রবীণ অধ্যাপক কমিটির তালিকায় ঠাঁই পাননি বলে অভিযোগ। প্রতিবাদে বুধবার স্বাস্থ্য ভবনের দেওয়ালে নানা পোস্টার দেখা গিয়েছে। যেখানে উত্তুরে হাওয়ার (পড়ুন উত্তরবঙ্গ লবির) দাপটে স্বাস্থ্য ভবন একদিন সন্দেশখালি হয়ে যাবে বলে লেখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জেলা সফর থেকে ফিরলেই নয়া স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা পদে নাম চূড়ান্ত হবে বলে চিকিৎসক মহলের অনুমান।
গত বছরের সেপ্টেম্বরে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার পদ থেকে অবসর নেন দেবাশিস ভট্টাচার্য অবসর নেন। ওই মাসেরই প্রথম দিকে স্বাস্থ্য দপ্তর বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা নিয়োগের জন্য আবেদনপত্র চেয়েছিল। সেই মতো ২৫টি আবেদন জমা পড়ে। সেখান থেকে ১২ জনের ইন্টারভিউ নেয় সার্চ কমিটি। কমিটিতে আছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্বাস্থ্য নিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান সুদীপ্ত রায়, সৌমেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। কমিটি নতুন স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা নিয়োগের জন্য সোমবার সরকারের কাছে তালিকা জমা দেয়। তালিকায় প্রথম নামটি রয়েছে বর্ধমান মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ কৌস্তভ নায়েক, দ্বিতীয়, তৃতীয়তে আছেন যথাক্রমে স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সুহৃতা পাল এবং কলকাতা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের সহ সভাপতি সুশান্ত রায় এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সার্চ কমিটি সব দিক বিবেচনা করেই তিনজনের নাম পাঠিয়েছে। এখানে উত্তরবঙ্গ-দক্ষিণবঙ্গ লবির কোনও প্রশ্ন নেই।’
অভিযোগ, অনেক সিনিয়ার ও অভিজ্ঞ অধ্যাপক চিকিৎসককে ছাপিয়ে কৌস্তভ বাগচীকে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার পদ পাইয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। একান্তই যদি তা না হয় তাহলে সুহৃতা পালকে ওই পদে চাইছে উত্তরবঙ্গ লবি। অভিযোগ, ইন্টারভিউ দেওয়া অধ্যাপক চিকিৎসকদের অনেকেরই চার, পাঁচ বছর অধ্যক্ষ হিসাবে কাজ ও স্বাস্থ্য শিক্ষায় যুগ্ম সচিব হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। প্রসঙ্গত, স্বাস্থ্য ভবনে উত্তরবঙ্গ লবির প্রভাব নিয়ে কয়েক বছর ধরেই চর্চা চলছে। বিশেষ করে জলপাইগুড়ির চিকিৎসক সুশান্ত রায় এবং একদা উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজের ছাত্র এবং পরে এখানকার চিকিৎসক অভীক দে-কে নিয়েই উত্তরবঙ্গ লবি হিসাবে দক্ষিণবঙ্গে চর্চা রয়েছে। অভীক বর্তমানে বর্ধমান মেডিকেল কলেজে কর্মরত। সুশান্ত রায় ও অভীক দে দুজনই রাজ্য মেডিকেল কাউন্সিলের কর্তা। স্বাভাবিকভাবেই অভীকের কলেজের অধ্যক্ষের নাম পরবর্তী স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তা হিসাবে তালিকার প্রথমে থাকায় হইচই পড়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক চিকিৎসক মঞ্চের নামে স্বাস্থ্য ভবনের দেওয়ালে বুধবার পোস্টার পড়ে।