ধূপগুড়ি: পুরোনো প্রবাদ বলে ‘রাজার অজান্তেই রাজ্যে মোচ্ছব।’ নবগঠিত মহকুমা ধূপগুড়ির জন্য স্থায়ী মহকুমা শাসকের দপ্তর এবং ট্রেজারি নির্মাণের ব্যাপারটাও অনেকটা সেরকম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দুই অফিস তৈরির জন্যে ইতিমধ্যেই রাজ্যের পূর্ত দপ্তর ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি টেন্ডার ডেকে বসে রয়েছে। টেন্ডার ডাকার আগে অতিরিক্ত জেলা শাসক সহ পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকরা এসে ধূপগুড়ি সুপার মার্কেটে বিস্তারিত মাপজোখও করে গিয়েছেন। কিন্তু পূর্ত দপ্তরের ওই টেন্ডারে দুই অফিসের জন্য ভবন উন্নতিকরণের উল্লেখ থাকলেও কোন দুটি ভবনের কথা বলা হয়েছে তার উল্লেখ মেলেনি। আর এখান থেকেই তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। সেই ধন্দ আরও বাড়িয়ে ধূপগুড়ি সুপার মার্কেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক তথা জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিব সুব্রত দে জানান, এমন কোনও খবর বা প্রস্তাব তাঁর জানা নেই। ধূপগুড়ি সুপার মার্কেটের দুটি ভবন কেউ চায়নি এবং দেওয়া হবে বলে কোনও বিভাগীয় নির্দেশিকাও তিনি পাননি।
ধোঁয়াশা কাটাতে দুই অফিস নির্মাণের টেন্ডার যিনি ডেকেছেন সেই রাজ্য পূর্ত দপ্তরের জলপাইগুড়ি ডিভিশনের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার রাজীব সরকারের কাছে জানতে চাইলে তাঁর বক্তব্য, ‘কোন ভবন সংস্কার হবে সেটা স্থানীয় স্তরে দপ্তরের আধিকারিকরাই বলতে পারবেন। সেখানেই খোঁজ করতে হবে।’
সেই সুবাদে পূর্ত দপ্তরের গয়েরকাটা সাব-ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার অখিলচন্দ্র বর্মনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সুপার মার্কেটে দুটি ভবন সংস্কার করা হবে। পুরোনো একটি ভবন সংস্কার করে ট্রেজারি অফিস এবং নতুন একটি বিল্ডিংয়ে এসডিও অফিস হবে।’
টেন্ডার নিয়ে তিন আধিকারিকের তিন রকম দাবি এবং বক্তব্যের পর এবিষয়ে চূড়ান্ত মতামত জানতে জেলা শাসক শামা পারভিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও এবিষয়ে তিনি কোনও মন্তব্য করেননি। ফলে এসডিও অফিস ও ট্রেজারি নিয়ে জল্পনা আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
পূর্ত দপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্য কৃষিজ বিপণন দপ্তরের অধীন ধূপগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজার চত্বর বা সুপার মার্কেটে দুটি ভবন নির্ধারিত হয়েছে মহকুমা শাসক ও ট্রেজারি অফিসারের দপ্তর হিসেবে। এর মধ্যে যে ভবনে একসময় বাজার সমিতির সচিব বসতেন তথা একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের শাখা ছিল সেখানে ৭৪ লাখ ৩৯ হাজার ৩৪২ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে ট্রেজারি। তার পাশেই অপর একটি নবনির্মিত ভবনে হবে এসডিও অফিস যার জন্যে খরচ হবে ৬৫ লাখ ১৫ হাজার ৩২৪ টাকা। গত মাসে জেলা নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির সচিবের ডাকা দরপত্রে ধূপগুড়ি সুপার মার্কেট চত্বরে একটি পুকুর এবং অ্যাগ্রিকমোডিটি ভবন লিজে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। ওই ভবনেই ট্রেজারি করা হবে কি না তা নিয়েও সন্দেহ দানা বাঁধছে।
এদিকে, এসডিও অফিস ও ট্রেজারি নির্মাণের স্থান নিয়ে মন্তব্য না করলেও স্থায়ী মহকুমা পরিকাঠামোর টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন পুর প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান রাজেশকুমার সিং। তিনি বলেন, ‘জেলা প্রশাসন ধূপগুড়ি মহকুমাকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করে সাজাতে চাইছে। এটা অত্যন্ত আনন্দ এবং সদর্থক বিষয়। খুব দ্রুত মহকুমাবাসী পরিষেবা পাবেন বলেই আমার বিশ্বাস।’