উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ লোকসভা নির্বাচনে কি দার্জিলিং কেন্দ্রে কংগ্রেসের বাজি প্রাক্তন জিটিএ চেয়ারম্যান, একদা গুরুং ঘনিষ্ঠ বিনয় তামাং? এই প্রশ্নই এখন পাহাড়ের আনাচেকানাচে। রবিবারই কালিম্পংয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীর ‘হাত’ ধরে বিনয় তামাং যোগ দিয়েছেন কংগ্রেসে। এরপরই পাহাড়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। দুই দশক পর পাহাড়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে মরিয়া কংগ্রেস। আর বিনয়ের হাত ধরেই ফের নতুন করে নিজেদের দল গোছাতে শুরু করল হাত শিবির। সূত্রের খবর, পাহাড়ে ‘হাত’ শিবিরের হৃত গৌরব পুনরুদ্ধার করতে বিনয়কেই মুখ করতে চলেছে কংগ্রেস।
একসময় দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রটি ছিল কংগ্রেসের দখলে। ২০০৪সালে শেষবার কংগ্রেসের দাওয়া নরবুলা পাহাড়ে সাংসদ ছিলেন। ২০০৯ সালে দার্জিলিং কেন্দ্রটি চলে যায় বিজেপির দখলে। গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সমর্থন নিয়ে এই কেন্দ্রটি দখলে নেয় বিজেপি। পাহাড়ে বিমল গুরুংয়ের নেতৃত্বে তৈরি হয় গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার অন্যতম সৈনিক ছিলেন বিনয় তামাং। পরবর্তীতে বিমলের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে তিনি যোগ দিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। সেই সময় বিনয় জিটিএ চেয়ারম্যান হন। কিন্তু তৃণমূলের হয়ে একুশের বিধানসভা নির্বাচনে দাঁড়িয়ে হেরে যাওয়ার পর বিনয়ের সঙ্গে ফের দূরত্ব তৈরি হয় তৃণমূলের। সম্প্রতি বিনয়ের সঙ্গে সখ্যতা হয় বিমল গুরুংয়ের। মোর্চার মিটিং গুলিতেও দেখা যায় তাঁকে। এবার সব ছেড়ে বিনয় তামাং যোগ দিলেন কংগ্রেসে। আর তারপর থেকেই শুরু হয়ে যায় পাহাড়ে নয়া রাজনৈতিক সমীকরণ।
পাহাড়ে আপাতত বিজেপি, ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ও গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, হামরো পার্টির দাপট রয়েছে। যদিও সাংসদ পদ ছাড়া বিজেপির কিছুই নেই। পাহাড়ের নিয়ন্ত্রণ এখন অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার হাতে। সেভাবে পাহাড়ে বর্তমানে অস্তিত্ব নেই কংগ্রেস সিপিএমের। পাহাড় থেকে মুছে যাওয়া কংগ্রেসকে উজ্জীবিত করতে বিনয়ের হাত ধরেছে প্রদেশ কংগ্রেস। জিটিএ নির্বাচনে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েই নিজের বিধানসভা এলাকা থেকে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছে বিনয়। তাই তাঁকে খাটো করে দেখা বিশেষ বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
বিনয় তামাংকে আদৌ লোকসভায় কংগ্রেস প্রার্থী করবে কি না, তা নিয়ে অবশ্য মুখ খোলেনি প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব। বিনয়কে প্রার্থী করা হলে পাহাড়ে কংগ্রেস কতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে তা নিয়েই পাহাড়ের অন্যান্য রাজনৈতিক দল গুলো শুরু করে দিয়েছে হিসেব নিকেশ। যদিও নির্বাচনী লড়াই আরও কঠিন হলো বাকি দলগুলির কাছে বলে মনে করছে রাজনৈতিকমহল।
বিজিপিএমের মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, “বিনয়ের তামাং এর নিজের অস্তিত্ব নেই পাহাড়ে। তার সঙ্গে একটা লোক নেই। তার যোগদানে কিছু এসে যায়না।” বিজেপির জেলা সভাপতি কল্যাণ দেওয়ানের প্রতিক্রিয়া, “বিনয় তামাংকে পাহাড়ের লোক পছন্দ করেনা। নির্বাচনে লড়াই করে হেরেছে। তার যোগদানে কংগ্রেসের কোনও লাভ হয়নি।”