আলিপুরদুয়ার: রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের আসন সমঝোতার আসল ফর্মুলা কী? আদৌ কি এমন কোনও ফর্মুলা রয়েছে? সেটা কিছুতেই যেন পরিষ্কার হচ্ছে না সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যেও। কোচবিহারে বামেরা প্রার্থী দেওয়ার পরেও সেখানে প্রার্থী দিয়েছে কংগ্রেস। খোদ বিমান বসুর আবেদন উড়িয়ে দিয়ে সেই আসন থেকে তারা প্রার্থী প্রত্যাহার করেনি। আলিপুরদুয়ারে (Alipurduar) বাম প্রার্থী আরএসপির মিলি ওরাওঁকে তো প্রথম থেকেই কংগ্রেসের একটা বড় অংশের পছন্দ নয়। নিজেদের প্রার্থী চেয়ে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন, আন্দোলন সবকিছুই করে ফেলেছে। তারপর এখন কংগ্রেসেরই শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি বলছে, বামেদের প্রার্থীকে সমর্থন করে প্রচারে নামবে তারা। আর সেই দলেরই মাদার সংগঠন যে কী করবে, সেটা স্পষ্ট করে এখনও বলতে পারছে না।
রবিবার আইএনটিইউসির একটি বৈঠক হয় আলিপুরদুয়ার শহরের মাধব মোড় এলাকায় সংগঠনের জেলা কার্যালয়ে। সেখানেই বাম প্রার্থীকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এবিষয়ে আইএনটিইউসির জেলা সভাপতি বিবেক বোসের বক্তব্য, ‘ইন্ডিয়া জোট আছে বলেই আমরা বাম প্রার্থীকে সমর্থন করছি। আর মিলি ওরাওঁ শ্রমিক সংগঠন করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ওদের সংগঠন ও আমাদের সংগঠন একসঙ্গে কাজ করেছে। এই সমর্থনের বিষয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনাও হবে ওদের।’
আইএনটিইউসির সূত্রে খবর, আগামী রবিবার এই সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে একটি বৈঠক করতে পারেন বাম প্রার্থী এবং নেতারা। অন্যদিকে জেলা কংগ্রেস সভাপতি শান্তনু দেবনাথ বলছেন, মিলিকে সমর্থন নিয়ে তাঁদের সিদ্ধান্ত কী হবে, সেটা এখনও নাকি পরিষ্কার নয়। শান্তনুর কথায়, ‘তৃণমূল ও বিজেপিকে তো আমরা সমর্থন করব না এটা পরিষ্কার। তবে নির্বাচনে আমরা কী করতে চলেছি সেটা আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।’
এদিকে, দলেরই শ্রমিক সংগঠন তো মিলিকে সমর্থন করছে। এব্যাপারে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শান্তনুর যুক্তি, ‘ওদের সংগঠন একটা আলাদা সংবিধান নিয়ে চলে। ওরা নিজেদের মতো যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিতেই পারে। মাদার কমিটি ওইভাবে চলে না।’
বামেদের প্রার্থীকে সর্মথন করা নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেসের মধ্যে এই দ্বিমত আগেই সামনে এসেছে। দলের প্রাক্তন জেলা সভাপতি মণিকুমার দার্নাল বাম প্রার্থীকে সমর্থনের বিষয়ে জোরদার সওয়াল করেছিলেন। তবে বর্তমান জেলা সভাপতি, শান্তনু কিন্তু প্রথম থেকেই এই আসনে নিজেদের দলের প্রার্থীর দাবি করে আসছিলেন। এতে দলের লাভ হত বলে দাবি ছিল শান্তনুর।
যদিও পরে আলাদা প্রার্থী দেয়নি কংগ্রেস। তবে বামেদের সমর্থন করা নিয়ে দলের মধ্যে গোষ্ঠীকোন্দল আবার প্রকাশ্যে এল। এবার দেখার জেলা কংগ্রেসও কি আইএনটিইউসির পথেই হাঁটবে, নাকি তাদের সিদ্ধান্ত অন্যরকম হবে। অন্যদিকে, বামফ্রন্ট আবার কংগ্রেসের সমর্থন পেতে মরিয়া। জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক কিশোর দাসের কথায়, ‘আইএনটিইউসি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাকে স্বাগত জানাই। জেলা কংগ্রেস থেকেও আমাদের সমর্থন করবে বলে আমরা আশাবাদী।’