চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার: নিজের বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিলের টাকার পঞ্চাশ শতাংশও খরচ করতে পারেননি উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ (Udayan Guha)। টাকা খরচের নিরিখে সবচেয়ে পিছিয়ে বিজেপির বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন। আবার সবচেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে পেরেছেন বিজেপির বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে (Nikhil Ranjan Dey)। কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার আরেক বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামীও সেভাবে টাকা খরচ করতে পারেননি।
রাজ্যের বিধায়করা এলাকা উন্নয়ন তহবিলে বছরে ৬০ লক্ষ টাকা করে পেয়ে থাকেন। সেটা বর্তমানে চলতি বছর থেকে বেড়ে ৭০ লক্ষ টাকা হয়েছে। কোচবিহারে তৃণমূলের তিনজন বিধায়ক রয়েছেন। বিজেপির (BJP) বিধায়ক রয়েছেন ছয়জন। তার মধ্যে অধিকাংশই টাকা খরচ করতে পারেননি। উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বিধায়ক হবার পর ৬০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। তার মধ্যে তিনি ২৭ লক্ষ ৯৯ হাজার ১৯১ টাকার কাজ করেন। তিনি যে টাকা পেয়েছেন তার ৪৬.৬৫ শতাংশ খরচ করেছেন। ৩২ লক্ষ ৮০৯ টাকা পড়ে রয়েছে। আরও ৩০ লক্ষ টাকা জানুয়ারি মাসে তাঁর এলাকার উন্নয়নে দেওয়া হয়েছে। তিনি ২৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৮৭৯ টাকার নতুন প্রকল্প করার জন্য পরিকল্পনা নিয়েছেন। বিজেপির জেলার দুই বিধায়কের অবস্থা আরও খারাপ। শীতলকুচির বিজেপির বিধায়ক বরেনচন্দ্র বর্মন ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। তার মধ্যে তিনি এখনও পর্যন্ত প্রকল্প করে খরচ করেছেন মাত্র ২৯ লক্ষ ৮০ হাজার ৪৬৪ টাকা। তিনি খরচ করেছেন মাত্র ৩৩.১২ শতাংশ। নাটাবাড়ির বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। তার মধ্যে তিনি ৩০ লক্ষ ২৪ হাজার ২০১ টাকার কাজ করেছেন। খরচ করেছেন মাত্র ৩৩.৬০ শতাংশ। ৫৮ লক্ষ ১২ হাজার ৮৫৯ টাকা তাঁর পড়ে রয়েছে। মাথাভাঙ্গার বিজেপি বিধায়ক সুশীল বর্মন ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছেন। তার মধ্যে তিনি ৫২ লক্ষ ৫০ হাজার ৮৬৩ টাকার কাজ করেছেন। তাঁর খরচের হিসেব ৪৩.৭৬ শতাংশ। বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে ৫৪ লক্ষ ৮০ হাজার ৮ টাকা খরচ করেছেন। শতাংশের হিসাবে ৪৫.৬৭। বিজেপির উত্তরের বিধায়ক সুকুমার রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। তার মধ্যে ৭৬ লক্ষ ১৮ হাজার ১১০ টাকার কাজ করেছেন। শতাংশের হিসেবে ৬৩.৪৮ শতাংশ। আবার তৃণমূলের বিধায়ক জগদীশ বর্মা বসুনিয়া সবমিিলয়ে ৯০ লক্ষ টাকা পেয়েছিলেন। তার মধ্যে ৫৯ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯১৬ টাকার কাজ করেছেন। শতাংশের হিসেবে ৬৬.৪২ শতাংশ টাকা তিনি খরচ করেন। তৃণমূলের পরেশচন্দ্র অধিকারী ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে ৮৬ লক্ষ ১৪ হাজার ৫৯০ টাকার কাজ করেছেন। শতাংশের হিসেবে ৭১.৭৯ শতাংশ। তবে জেলার মধ্যে টাকা খরচের নিরিখে সবচেয়ে উপরে আছেন কোচবিহারের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে। ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকার মধ্যে তিনি ১ কোটি ৫ লক্ষ ৩ হাজার ৯৫৪ টাকার কাজ করেছেন। তাঁর খরচের শতাংশের হিসেব ৮৭.৫৩ শতাংশ।
বিধায়ক উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ নিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ বলেন, ‘পাঁচটি প্রকল্পের কাজ এর মধ্যেই শুরু হবে। আমি জেলার বাইরে রয়েছি। কোচবিহারে ফিরে সই করলেই কাজ চালু হবে।’ জেলার ‘ফার্স্ট বয়’ বিজেপির নিখিলরঞ্জন দে বলেন, ‘আমি লেগে ছিলাম। প্রশাসনের কাছে বারবার গিয়ে তাগাদা দিয়েছি। তারপরই কাজগুলো হয়েছে।’