রাহুল মজুমদার, শিলিগুড়ি: ভালোবাসার দিনেই কাছে নেই সঙ্গিনী। দুজনকে পাশাপাশি দুটি শেলটারে বন্দি করে রাখা হলেও একে অপরকে দেখার জো নেই। তাই বেজায় মন খারাপ বেঙ্গল সাফারির নয়া সদস্য আকবরের। সঙ্গীকে দেখতে না পেয়ে রাগে ফুঁসছে সীতা। দুজনেই এদিন অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম খাবার খেয়েছে। আকবরকে দিনভর নাইট শেলটারের (Night Shelter) একটি কোনায় বসে থাকতে দেখা গিয়েছে। অন্যদিকে, সীতাও তার সঙ্গীর জন্য দিনভর গর্জন করেছে। রাজ্য জু অথিরিটির (Zoo Authority) সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরীর বক্তব্য, ‘দুজনেই সুস্থ রয়েছে। খাবারও খেয়েছে। বেঙ্গল সাফারির বাকি সদস্যরাও ভালো আছে।’
বছর সাতেক আগে ত্রিপুরার চিড়িয়াখানায় জন্ম হয়েছিল আকবরের। একসঙ্গে তিন শাবকের জন্ম দিয়েছিল আকবরের বাবা-মা। তাই অমর-আকবর-অ্যান্টনি সিনেমার নামে তিনজনের নাম রাখে কর্তৃপক্ষ। আকবরের জন্মের বছর দুয়েক বাদে ত্রিপুরার চিড়িয়াখানাতেই জন্ম হয় সীতার। ছোট থেকেই দুজনের মধ্যে সখ্য ছিল। তাই সেখানে দুজনকে একসঙ্গেই রাখা হত। দুই রাজ্যের চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে অ্যানিমাল এক্সচেঞ্জ (Exchange) প্রক্রিয়ার শুরু হওয়ার সময় বেঙ্গল সাফারির (Bengal Safari) কর্তারা অমর, আকবর, অ্যান্টনি তিনজনকেই দেখেন। সেইসঙ্গে সীতাকেও পর্যবেক্ষণ করা হয়। সাফারি কর্তারা দেখতে পান আকবরের সঙ্গেই সীতার বেশি সখ্য রয়েছে। দুজনে একসঙ্গে ছোটাছুটি করে খেলাধুলো করছে। সেইমতো এই দুজনকে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সোমবার দুপুরে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে এসে পৌঁছায় সিংহ জুটি। কিন্তু পার্কে আনার পরেই দুজনকে পৃথক পৃথক নাইট শেলটারে রাখা হয়েছে। সোমবার বিষয়টি দুজনের ওপর তেমন প্রভাব না ফেললেও মঙ্গলবার থেকে পরিস্থিতি কিছুটা বদল হয়েছে। সাফারি পার্ক সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথম দিন নির্বিঘ্নে কাটলেও মঙ্গলবার সকাল থেকেই মনমরা আকবর। শেলটারের এককোণে বসে থাকছে। খাবার দেওয়া হলে অনেকক্ষণ বাদে কাছে এসে খাচ্ছে। বসে বসে সাফারির কর্মীদের পর্যবেক্ষণ করছে। অন্যদিকে, সীতা সকাল থেকেই শেলটারে অস্থির হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
পার্কের কর্মীদের ধারণা, সঙ্গীর থেকে আলাদা হয়েই দুজনের স্বভাবে এই পরিবর্তন। অন্যদিকে, দুজনের স্বাস্থ্যের ওপর নিয়মিত নজর রাখছেন সাফারি পার্কের চিকিৎসকরা। খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন প্রোটিন (Protein) জাতীয় বস্তু দেওয়া হচ্ছে। আটটি সিসিটিভি (CCTV) ক্যামেরার মাধ্যমে দুজনের ওপর নজর রাখা হচ্ছে