শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। কাঠফাটা রোদে স্বস্তি পেতে অনেকেই রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া আখের রসে গলা ভেজাচ্ছেন। চাহিদার তুলনায় কম হলেও কিছু পরিমাণ আখ চাষ (Sugarcane cultivation) হচ্ছে কোচবিহারেই (Cooch Behar)। আখ চাষে সময় লাগে তুলনামূলক বেশি। প্রায় এক বছর লেগে যায় এই চাষ সম্পন্ন হতে। তাই অনেক চাষিই আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
তবুও যাঁরা এখনও আখ চাষ টিকিয়ে রেখেছেন তাঁদের মধ্যে কেউ দিনমজুর আবার কেউ কারখানার শ্রমিক। সেই কাজের ফাঁকেই আখ চাষ করে বাড়তি রোজগারের দিশা দেখছেন তাঁরা। কোচবিহারে চাষ হওয়া সেই আখের রসেই তৃপ্তি পাচ্ছেন গরমে নাজেহাল হওয়া বাসিন্দারা।
জেলা কৃষি দপ্তর সূত্রেই জানা গিয়েছে, জেলার মধ্যে মূলত কোচবিহার সদর মহকুমাতেই আখ চাষ ভালো হয়। এবার প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে এই চাষ হচ্ছে। এক দশক আগে এই চাষের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ থাকলেও এখন তা কমেছে। এক বিঘা জমিতে আখ চাষের জন্য প্রায় খরচ হয় ২০-২৫ হাজার টাকা। সেই আখ ৫০-৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন চাষিরা।
জেলা কৃষি দপ্তরের উপ অধিকর্তা গোপালচন্দ্র মান বলেছেন, ‘আখ চাষে সময় বেশি লাগে বলে চাষিদের ক্ষেত্রে আগ্রহ কম থাকে। তবে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে আখখেতের মাঝে বিনস, মটরশুঁটি, মুগ ডাল, বেগুন সহ অন্যান্য সবজি চাষ করা যায়। তাতে লাভের পরিমাণ বাড়ে। চাষিদের এবিষয়ে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়।’
এখানে উৎপাদিত ফসলগুলি আখের রস বিক্রেতারাই কিনে নেন। কিছু আখ ফলের দোকানগুলিতে যায়। ডাওয়াগুড়ির এক আখচাষি তাপস পাল বলেছেন, ‘আখের কাটিং রোপণ করার পর গোবর সার, রাসায়নিক সার দিতে হয়। পোকার আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কীটনাশক স্প্রে করা হয়। এছাড়াও পাতা ছেঁটে পরিচর্যা করলে তবেই আখ হৃষ্টপুষ্ট হয়।’
কোচবিহার শহরের ফুটপাথে আখের রস বিক্রি করছিলেন সাব্বির আলি। তিনি বললেন, ‘ডাওয়াগুড়ি, পুণ্ডিবাড়ি থেকে আখ আনি। কিন্তু যখন বেশি চাহিদা থাকে তখন অসম থেকেও আখ আসে। কোচবিহারে সবসময় আখ পাওয়া যায় না। এখানে বেশি বেশি চাষ হলে আমাদের ভিনরাজ্যের উপর নির্ভর করতে হবে না।’