দীপেন রায়, মেখলিগঞ্জ: পাচার আটকাতে চরের জমিতে রাসায়নিক সার (Fertilizer) নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না বিএসএফ। আর এতেই সমস্যায় পড়েছেন এলাকার কৃষকরা। কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার মেখলিগঞ্জ (Mekhliganj) ব্লকের কুচলিবাড়ির ফকতের চর এলাকার ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, তিস্তার ওই চরের প্রতিকূল সীমান্ত দিয়ে গোরু সহ বিভিন্ন জিনিসপত্রের পাশাপাশি রাসায়নিক সারও পাচার হচ্ছে। সেই কারণে ওই এলাকায় বিএসএফের কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। কিছুদিন ধরে তারা সেখানে রাসায়নিক সার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। এর ফলে সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ কৃষকরা। তাঁদের অভিেযাগ, ঠিকঠাক সার না দেওয়ায় ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। কয়েকজন পাচারকারীর জন্য সার একেবারে বন্ধ করে দেওয়ায় তাঁরা সমস্যায় পড়েছেন। যদিও বিএসএফের জলপাইগুড়ি সেক্টরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘ভুট্টা চাষের নামে চািষরা প্রচুর ইউরিয়া সার নিয়ে যায়। প্রতিকূল সীমানার সুযোগ নিয়ে সেই সার অনেকে পাচার করে দেয় বাংলাদেশে। এদিকে ভুট্টা চাষের জন্য প্রয়োজন ডিআইবি সারের। সেই সার তারা বাংলাদেশ থেকে আনছে।’ তবে সার নিয়ে যাওয়া একেবারে বন্ধ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন ওই আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘জমির কাগজ অনুযায়ী বিঘা প্রতি এক প্যাকেট করে রাসায়নিক সার নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।’
এদিকে কৃষকরা জানান, চরের অধিকাংশ জমিরই কাগজপত্র নেই। খাসজমি যে যতটা দখল করতে পারে সে ততটা চাষাবাদ করে। স্থানীয় এক কৃষকের বক্তব্য, ‘সামান্য কয়েকজন পাচারকারী পাচারের জন্য চাষাবাদ করে। তাদের জন্য দরিদ্র কৃষকরা সমস্যায় পড়ছেন।’
ভারতে যেখানে ইউরিয়া সারের বস্তা ৪০০ টাকা সেখানে বাংলাদেশে ১৬০০ টাকা। আবার ডিআইবি সারের ক্ষেত্রে উলটো। বাংলাদেশের তুলনায় ভারতে এর বাজার চড়া। চািষরা জানান, চরের প্রায় দুই থেকে তিন হাজার বিঘা জমিতে ভুট্টা সহ বিভিন্ন ফসলের চাষ করা হয়। বর্তমানে ভুট্টাখেতে ভরে গিয়েছে সে চর। দূর থেকে দেখলে মনে হয় এক টুকরো সবুজ দ্বীপ। সময়মতো সার না দিলে ফসলের ঘাটতির পাশাপাশি বালুময় চরে ভুট্টা বাঁচানোই কঠিন হবে বলে দাবি রবিউল ইসলাম, রশিদুল ইসলাম, ফণীন্দ্র রায়, আবদুল গোফের মতো কৃষকদের।
এ নিয়ে স্থানীয় কৃষকরা কুচলিবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের দ্বারস্থ হয়েছেন। প্রধান নিরলা ওরাওঁয়ের আশ্বাস, ‘আমরা বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব।’