কোচবিহার: রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে স্থায়ী কর্মী নিয়োগ বন্ধ রয়েছে। সেই তালিকায় রয়েছে কোচবিহার জেলার গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি (Cooch Behar Panchayat Office)। এখানেও নিয়োগ বন্ধ থাকায় ঘাটতি হচ্ছে পরিষেবায়। গ্রাম পঞ্চায়েতের তিনটি স্তরেই দেখা দিয়েছে কর্মীসংকট। পরিস্থিতি এমনই যে কোথাও একজন কর্মীকে দুই থেকে তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে কাজের জন্য যেতে হচ্ছে। কোথাও আবার শনি ও রবিবার এমনকি ছুটির দিনেও কাজ করতে হচ্ছে। বেশ কয়েকটি জায়গায় গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন কর্মীরা। পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত কর্মচারী সমিতিগুলির একটি যৌথ কমিটি রয়েছে। তার কোচবিহার জেলা সম্পাদক উৎপল চক্রবর্তীর দাবি, অবিলম্বে শূন্যপদে কর্মী নিয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে, অতিরিক্ত জেলা শাসক সৌমেন দত্তের আশ্বাস, ‘কর্মীসংকটের বিষয়টি রিপোর্ট আকারে রাজ্যে পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন পেলেই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
সবমিলিয়ে কোচবিহার (Cooch Behar) জেলার ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত, ১২টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ মিলে স্থায়ী কর্মী থাকার কথা ১ হাজার ২০৮ জন। কিন্তু ৮৬৮ জনকে দিয়েই চলছে কাজ। ৩৪০টি শূন্যপদ পূরণ করার ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেই সরকারের। উৎপল বলেন, ‘গত তিন-চার বছর ধরে কোনও স্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। একজনকেই একাধিক গ্রামে ঘুরে কাজ করতে হচ্ছে। ফলে ব্যাপক চাপ পড়ছে। তার প্রভাব পড়ছে পরিবারে।’ তাঁরা কোনও কথাই শুনছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
কোচবিহার জেলায় ১২৮টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ৩৮৪ জন কর্মী থাকার কথা। তারমধ্যে রয়েছেন ২৭৩ জন। এখানে শূন্যপদ ১১১টি। গ্রাম পঞ্চায়েতে সহায়ক থাকার কথা ২৫৬ জন, রয়েছেন ১৮২ জন। শূন্যপদ ৭৪টি। সচিব থাকার কথা ১২৮ জন, রয়েছেন ৮২ জন। শূন্যপদ ৪৬টি। নির্মাণসহায়ক ১২৮ জনের মধ্যে ১১৪ জন রয়েছেন। শূন্যপদ ১৪টি। নির্বাহীসহায়ক ১২৮ জনের মধ্যে ৮৫ জন রয়েছেন। এখানে শূন্যপদের সংখ্যা ৪৩।
জেলার ১২টি পঞ্চায়েত সমিতিতে (Panchayat samiti) সবমিলিয়ে ১০৮ জন কর্মী থাকার কথা। রয়েছেন ৯০ জন। ১৮টি পদ খালি। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি জেলা পরিষদে। কারণ পঞ্চায়েত ব্যবস্থার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা পরিষদ। জেলার গ্রামীণ এলাকার সিংহভাগ কাজের সূচনা হয় এখান থেকেই। এখানে ৭৬ জন স্থায়ী কর্মীর মধ্যে রয়েছেন ৪২ জন। শূন্যপদ ৩৪টি। গত কয়েক বছরে এখানে অনেকেই অবসর নিয়েছেন। কিন্তু পূরণ হয়নি পদ। আর এই নিয়েই কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের জেলা সভাপতি উত্তমকুমার রায় জানান, রাজ্য সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী খুব শীঘ্রই কর্মী নিয়োগ হবে।