নয়াদিল্লি: করোনা থেকে রেহাই পেতে যাঁরা কোভ্যাক্সিন বা কোভিশিল্ড নিয়েছিলেন, সরকারি কো-উইন অ্যাপের মাধ্যমে তাঁদের প্রত্যেককেই নিজেদের তথ্য নথিভুক্ত করতে হয়েছিল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকে। এবার সেই তথ্য ফাঁস হওয়ার অভিযোগ তুলল তৃণমূল কংগ্রেস।
সোমবার টুইট করে তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সাকেত গোখলে অভিযোগ করেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রক পরিচালনাধীন কো-উইন অ্যাপ্লিকেশনে যাঁরা ব্যক্তিগত তথ্য দিয়েছিলেন, সেই সমস্ত তথ্য কোনও অজ্ঞাত কারণে ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এনিয়ে কেন্দ্র সরকার কোনও উদ্যোগ নিচ্ছে না। অভিযোগের তির মনসুখ লাল মাণ্ডব্যের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক ও অশ্বিনী বৈষ্ণোর কেন্দ্রীয় টেলিকম এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের বিরুদ্ধেও। তবে উভয় মন্ত্রকই তাদের বয়ানে এনিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থান তুলে ধরেছে, যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
সাকেতের দাবি, সরকারের কাছে গচ্ছিত দেশের সাধারণ মানুষের ব্যক্তিগত তথ্য আর সুরক্ষিত নেই। দেশের আম জনতার পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতা, খ্যাতনামা ব্যক্তিদের তথ্য ফাঁস হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও ব্রায়েন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও বর্ষীয়ান কংগ্রেস সাংসদ পি চিদম্বরম, জয়রাম রমেশ, কেসি বেণুগোপালের ব্যক্তিগত তথ্য, তাঁদের ফোন নম্বর, ইমেল, আধার ও পাসপোর্ট নম্বর লিক হয়েছে। এছাড়া রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হরিবংশ সিং, সাংসদ সুস্মিতা দেব, অভিষেক মনু সিংভি, শিবসেনার সঞ্জয় রাউতের তথ্যও ফাঁস হয়েছে বলে অভিযোগ সাকেতের।
এই অভিযোগ নিয়ে রীতিমতো আলোড়ন পড়েছে কেন্দ্রীয় মহলে। কো-উইন তথ্য ফাঁস প্রসঙ্গে মনসুখলাল মাণ্ডব্যের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক বিবৃতি জারি করে বলে, ‘কো-উইন একটি অতি সুরক্ষিত পোর্টাল, যা আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর। ফায়ারওয়াল, অ্যান্টি-ডিডিওএস’, এসএসএল/টিএলএস-এর মতো অ্যাপ্লিকেশন দ্বারা সুরক্ষিত কো-উইন পোর্টাল। ওটিপির মাধ্যমে যাবতীয় তথ্য আদান-প্রদান করা হয়ে থাকে, সেখানে তথ্য ফাঁস হওয়ার সম্ভাবনাই নেই। তবু অভিযোগ নিরিখে এনিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, চাওয়া হয়েছে রিপোর্ট।’
অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় টেলিকম ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজীব চন্দ্রশেখর বলেছেন, ‘মন্ত্রক বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।’ মন্ত্রীর দাবি, সোমবার বিকেলের মধ্যে টেলিগ্রাম বটের ডেভলপার্সরা সমস্ত সংবেদনশীল তথ্য মুছে ফেলেছে এবং ডাটাবেসটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘খুবই দুর্ভাগ্যজনক এই ঘটনা। এর দায় অবশ্যই সরকারকে নিতে হবে। আগামী দিনে সরকার এ বিষয়ে কী করে, সেটাই দেখার। এরকম ঘটনা সত্যি হলে অনেকের অনেক রকম ক্ষতি হতে পারে।’