উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ বিধানসভায় খাতা খুলতে মরিয়া সিপিএম। ধূপগুড়ি বিধানসভার উপনির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে প্রার্থী ঘোষণা করল সিপিএম। এই নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে ভাওয়াইয়া সঙ্গীত শিল্পী তথা সামাজিক ন্যায় বিচার মঞ্চের নেতা ঈশ্বরচন্দ্র রায়। তিনি পেশায় ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।
সম্প্রতি বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের মৃত্যুর কারণে খালি হয় ধূপগুড়ির আসন। গত ৮ অগাস্ট জাতীয় নির্বাচন কমিশন দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বিধানসভার উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করে। তার মধ্যে রয়েছে এ রাজ্যের ধূপগুড়িও। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ভোটগ্রহণ। ফল ঘোষণা ৮ সেপ্টেম্বর। দিনক্ষন ঘোষণার পর থেকেই ধূপগুড়িতে তোরজোড় শুরু করে দিয়েছে প্রতিটি রাজনৈতিক দলই। বিজেপি তৃণমূলকে টেক্কা দিয়ে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করে দিল সিপিএম।
বর্তমানে বঙ্গ বিধানসভায় কংগ্রেস সিপিএমের আসন সংখ্যা শূন্য। সম্প্রতি সাগরদিঘি উপনির্বাচনে জিতে কংগ্রেস খাতা খুললেও, দলের জয়ী বিধায়ক বাইরন বিশ্বাস তৃণমূলে শামিল হওয়ায় ফের শূন্য হয়ে গিয়েছে তারা। ধূপগুড়িতে এ বার ভোটের লড়াইয়ে নামছে বামেরা। এই আসনে বামেদের সমর্থন দেওয়ার কথা ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস। এই আসনে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল ও বিজেপি। জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী ইন্ডিয়া জোট হলেও ধূপগুড়িতে যে তা কার্যকরী হচ্ছেনা এটা স্পষ্ট। ইন্ডিয়া জোট নিয়ে সিপিএম কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছিল, তা অনেকটাই কেটে যাবে বলে ধারনা বাম-কংগ্রেসের। তৃণমূলের জোট নিয়ে সিপিএম, কংগ্রেস নেতাদের বক্তব্য, এই ভোটে আর কিছু হোক না-হোক, বাম-কংগ্রেস কর্মীদের মধ্যে যে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল, সেটা কেটে যাবে।
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী সিপিএমের মমতা রায় ৩৪.২৬ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন। প্রায় ৪৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জিতেছিলেন তৃণমূলের মিতালি রায়। ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে ৪৫ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে ধূপগুড়ি জেতে বিজেপি। ৪৩.৭৫ শতাংশ ভোট পেয়ে পরাজিত হয় তৃণমূলের মিতালি। পাঁচ শতাংশের সামান্য বেশি ভোট পেয়ে জামানত জব্দ হয়েছিল বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী প্রদীপকুমার রায়ের।
বিজেপির জেতা আসনে এ বার কি কংগ্রেসের হাত ধরে ঈশ্বরচন্দ্র রায় সিপিএমকে খাদ থেকে টেনে তুলতে পারবেন? রাজনৈতিক মহলের ধারনা, ধূপগুড়িতে রাজবংশী ভোট বড় ফ্যাক্টর। সিপিএম প্রার্থী ঈশ্বরও রাজবংশী সম্প্রদায়ভুক্ত। এছাড়া বামেদের ভোট বিজেপিতে চলে যাওয়ায় গত নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব পড়েছিল সিপিএমের ভোটবাক্সে। এবার বাম কংগ্রেস জোট কতটা সেই ভোট ফেরাতে পারে নিজেদের বাক্সে, এখন সেটাই দেখার।