অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি: একদা সবসময় জমজমাট। ময়নাগুড়ি শহরের নতুন বাজারে থাকা সিপিএমের ময়নাগুড়ি ২ নম্বর লোকাল কমিটির কার্যালয়টি (Office) আজ যেন ভূতুড়ে বাড়ি। দলের কর্মী–সমর্থকদের কেউই আজকাল আর সেখানে পা বাড়ান না। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ফাঁকা অবস্থায় পড়ে থাকা কার্যালয়টিতে সমাজবিরোধীদের আখড়া বসে। সেখানে নানা অসামাজিক কাজকর্ম চলে। এক সময় রাজনৈতিক মহলে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই কার্যালয়টির এহেন দশায় সংশ্লিষ্ট মহলে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। অসামাজিক কাজকর্ম (Antisocial Activities) রুখতে নিয়মিতভাবে অভিযান চালানো হয় বলে ময়নাগুড়ি থানা জানিয়েছে।
সিপিএমের তৎকালীন লোকাল কমিটির (Local Committee) সম্পাদক নবীন সরকার বলেন, ‘লোকাল কমিটির পরিবর্তে এরিয়া কমিটি হওয়ায় দলের এখানকার মূল কার্যালয়টি পুরাতন বাজারে তৈরি করা হয়েছে। তবে পুরাতন কার্যালয়টি সংস্কার করার চেষ্টা চলছে।’ দলের জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলা কমিটির সদস্য জ্যোতিপ্রকাশ রায় বললেন, ‘ওই কার্যালয়টি সংস্কারের জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। তবে আগামীতে যাতে সেটিকে যুব কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা যায় সেই চিন্তাভাবনা চলছে।’
ময়নাগুড়ি শহরের নতুন বাজার এলাকায় বর্তমানে পুরসভার অন্তর্ভুক্ত ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে বাম আমলে সিপিএমের এই কার্যালয়টি চালু হয়েছিল। একটা সময় এই কার্যালয়ে দলীয় কর্মী সমর্থকদের ভিড় লেগেই থাকত। বামেরা রাজ্যের ক্ষমতা হারানোর পর থেকে এই কার্যালয়টি জৌলুস হারাতে শুরু করে। দলের এখানকার মূল কার্যালয়টি ময়নাগুড়ি পুরাতন বাজারে চালু করায় এই কার্যালয়টি গুরুত্ব হারানো শুরু করে। একটি দুঃস্থ পরিবার একসময় এই কার্যালয়ে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় নিয়েছিল। তবে পুনর্বাসন পেয়ে ওই পরিবারটি অন্যত্র চলে যাওয়ার পর এই কার্যালয়টি পুরোপুরিভাবে বেহাল হয়ে পড়া শুরু করে। এই মুহূর্তে কার্যালয়টির ভগ্নপ্রায় (Broken) দশা। যে কোনও সময় দেওয়ালের চাঙড় খসে পড়ার জোগাড় হয়েছে। দরজা–জানলাগুলি ভেঙেচুরে একাকার। জানলার গ্রিল (Grill) চুরি হয়ে গিয়েছে।
সন্ধ্যা নামার পর এখানে সমাজবিরোধীরা নেশার আসর বসায়। কোনও কোনও দিন তো দিনেরবেলাতেও এ জাতীয় আসর বসে। এখানে যেভাবে নানা বয়সি দুষ্কৃতীর দাপট বাড়ছে তাতে বাসিন্দারা ক্ষোভ জানিয়েছেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলার ললিতা রায় বলেন, ‘এই কার্যালয়টির সমস্যার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের সঙ্গে কথা বলব। পাশাপাশি, সেখানে দুষ্কৃতীদের কার্যকলাপ রুখতে পুলিশের সঙ্গে কথা বলব।’