প্রসেনজিৎ সাহা, দিনহাটা: নগরায়ণের ধাক্কায় দিনহাটা শহরে লাফিয়ে বাড়ছে জনসংখ্যা। আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে যানবাহনও। কিন্তু শহরবাসীর সেই যানবাহন পার্কিং করার মতো সুনির্দিষ্ট জায়গা শহরে নেই। শহরবাসীর গাড়ি রাখতে অগত্যা ভরসা শহরের মূল রাস্তার একাংশ।
স্বাভাবিকভাবেই নিয়ম না মেনে পার্কিংয়ের জেরে ক্রমশ সংকীর্ণ হয়ে পড়ছে শহরের মূল রাস্তা। এর জেরে যেমন বাড়ছে দুর্ঘটনার শঙ্কা, তেমনি তৈরি হচ্ছে শহরে কৃত্রিম যানজট। এনিয়ে দিনহাটা শহরের যেন হাঁসফাঁস অবস্থা। পুরসভার চেয়ারম্যান গৌরীশংকর মাহেশ্বরীর বক্তব্য, ‘পার্কিং জোন করার সদিচ্ছা পুরসভার রয়েছে, কিন্তু তার জন্য যে জায়গা প্রয়োজন তা পুরসভার কাছে নেই। তবে পার্কিং জোন করার চেষ্টা চলছে।’
পার্কিং জোন না থাকার ফলে নিত্যদিন সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে সাধারণ মানুষ থেকে ব্যবসায়ীদের। শুক্রবার দিনহাটা-কোচবিহার রোডের পাশে ব্যাংকে কাজ করতে এসেছিলেন ব্যবসায়ী জগন্নাথ সরকার। কিন্তু তাঁর গাড়িটি তিনি কোথায় রাখবেন সেই জায়গা খুঁজে পাচ্ছিলেন না। অগত্যা তিনি ব্যাংক থেকে অনেকটা দূরে এক দোকানের সামনে নিজের বাইকটি রেখে আসেন। যদিও তাঁকে বাইকটি রাখতে হয়েছিল মূল রাস্তার ওপরেই।
দিনহাটা-কোচবিহার রোডে হোক বা রংপুর রোড কিংবা গোসানি রোড সর্বত্রই ছবিটা একই। মূল রাস্তার ওপরে সার বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকছে বাইক, সাইকেল। পথচারীদের ফুটপাথ দখল হয়েছিল অনেক আগেই। এখন রাস্তার একাংশে অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য পথচারীদের চলার জন্য রাস্তাও যেন ক্রমে কমে আসছে।
শিক্ষক সত্যজিৎ সূত্রধরের কথায়, ‘দিনহাটা শহরের পাঁচমাথায় যেভাবে কৃত্রিম যানজট তৈরি হচ্ছে তা দ্রুত সমাধান করা উচিত পুর প্রশাসনের। নয়তো সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়বে বই কমবে না। পুরসভা পার্কিং জোন না গড়ে উঠার কারণ হিসেবে জায়গার অভাবের কথা বললেও ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী অবশ্য পুরসভার সদিচ্ছার অভাবকেই দায়ী করছেন। তাঁর কথায়, শহরের চওড়হাট বাজারের একাংশ, হরীতকীতলা মাঠের একাংশ, চড়ক মাঠের একাংশ, সংহতি ময়দানের একাংশে সকাল দশটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত পুরসভার তত্ত্বাবধানে অস্থায়ী পার্কিং জোন করা যেতেই পারে। এর ফলে পুরসভার আয় যেমন বাড়বে তেমনি কমবে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ এবং দিনহাটা শহরের জ্বলন্ত যানজট সমস্যাও অনেকটা মিটবে।
পার্কিং জোন করার সদিচ্ছা পুরসভার রয়েছে, কিন্তু তার জন্য যে জায়গা প্রয়োজন তা পুরসভার কাছে নেই। তবে পার্কিং জোন করার চেষ্টা চলছে।
