শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: কোচবিহার (Cooch Behar) জেলাজুড়ে সাইবার ক্রাইমের (Cyber Crime) জাল ছড়াচ্ছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রযুক্তির সাহায্যে ভিনরাজ্য থেকে কাজগুলো নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষ তো বটেই, পুলিশ সুপার, জেলা শাসক, প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদেরও বাঁচোয়া নেই।
কখনও তাঁদের নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় (Social media) ফেক অ্যাকাউন্ট তৈরি করে প্রতারণা করা হচ্ছে। আবার প্রযুক্তির সাহায্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খালি করে দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে। পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রত্যেককেই সতর্ক থাকতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়ায় অচেনা কাউকে তথ্য দেওয়া কিংবা কোনও অজানা লিংকে ক্লিক করাও উচিত নয়।’
একসময় মোবাইলে (Mobile) ফোন করে কৌশলে এটিএমের (ATM) পাসওয়ার্ড জেনে জালিয়াতি করা হত। এখন নতুন নতুন উপায় বের করেছে দুষ্কৃতীরা। কখনও নির্দিষ্ট নম্বরে লিংক পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সেই লিংকে ক্লিক করলেই সমস্ত তথ্য পৌঁছে যায় হ্যাকারদের কাছে। আবার কখনও পরিচিত কোনও ব্যক্তির নাম ব্যবহার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। সেই অ্যাকাউন্ট থেকে তাঁর পরিচিতদের মেসেজ করে নানা অছিলায় টাকাপয়সা চাওয়া হয়। কম দামে জিনিসপত্র বিক্রির প্রলোভন, ভিডিও কলের মাধ্যমে ছবি সংগ্রহ করে অশ্লীল ভিডিও বানিয়ে ব্ল্যাকমেলও রয়েছে।
জেলা পুলিশের সাইবার বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে জেলায় এই সংক্রান্ত মোট ২২টি এফআইআর দায়ের করা হয়েছিল। তার মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনজন আত্মসমর্পণ করেছিল। ২০২৩ সালে ২২টি এফআইআর করা হয়েছিল। ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। একজন আত্মসমর্পণ করে। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। তবে এফআইআরের বাইরেও প্রচুর পরিমাণে জালিয়াতির ঘটনা ঘটছে, যা পুলিশ পর্যন্ত পৌঁছায় না। এধরনের জালিয়াতি থেকে সুরক্ষিত থাকতে সাধারণ মানুষদের সতর্ক থাকার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। সাইবার বিশেষজ্ঞ তথা এথিক্যাল হ্যাকার ঋত্বিক রায়ের কথায়, ‘অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা না বুঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের ব্যক্তিগত নানা তথ্য দিয়ে দেন। প্রতারকরা ঠিক সেই সুযোগটা নিয়েই প্রতারণা করে। তাই যেই-ই হোক না কেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় অপরিচিত কাউকে বিশ্বাস করে তথ্য দিয়ে দেওয়া উচিত নয়।’