উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সংসারে অভাব। আর্থিক অনটনের কারণে এক পরিচিতের কাছ থেকে মাত্র ১৫০০ টাকা ধার করেছিলেন। কথা ছিল সুদ সমেত ফেরাবেন। প্রতিমাসে সময়মতো সুদ দিয়ে গেলেও কিছুতেই মহিলার টাকা পরিশোধ হচ্ছিল না। একসময় সুদ দেওয়া বন্ধ করতেই এক দলিত মহিলাকে নগ্ন করে মারধর করা হল। শুধু তাই নয়, খাওয়ানো হল প্রস্রাব। এমনই নৃশংস ঘটনা ঘটেছে বিহারের পাটনাতে। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত বাবা ও ছেলে পলাতক।
জানা গিয়েছে, আর্থিক অনটনের কারণে টাকার প্রয়োজন পড়ায় এক পরিচিতের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন ১৫০০ টাকা। কথা দিয়েছিলেন, সুদ সমেত সেই টাকা ফেরত দিয়ে দেবেন। মাস খানেকের মধ্যে সেই টাকাও শোধ করে দিয়েছিলেন। কথা ছিল মাসে মাসে সুদ দিয়ে টাকা শোধ করবেন। কথামতোই সুদ দিচ্ছিলেন। তবে দিন দিন যেন বাড়ছিল সুদের অঙ্ক। মাসে মাসে সুদ দেওয়া এক সময়ে বন্ধ করেন ওই মহিলা। এরপরই নগদ ১৫০০টাকা ঋণ মেটানোর জন্য মহিলার ওপর চাপ সৃষ্টি করে ঋণদাতা প্রমোদ সিং। সেই সময় ওই মহিলা প্রমোদকে জানান, অনেক দিন আগেই শোধ হয়ে গিয়েছে ঋণ। সেই টাকা দিতে অস্বীকার করতেই নির্মম অত্যাচারের শিকার হলেন দলিত মহিলা।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার রাত ১০টা নাগাদ মহিলার বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও হয় প্রমোদ সিং ও তার ছেলে অংশু সিং। বাড়ি থেকে জোর করে মহিলাকে তুলে নিয়ে যায় প্রমোদ ও তার দলবল। নিজেদের বাড়িতে নিয়ে গিয়েই শুরু হয় তাঁর ওপর নির্মম অত্যাচার। জোর করে তাঁকে সকলের সামনে মহিলাকে নগ্ন করা হয়। এরপর লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর চলে। এতেও শেষ হয়নি, ছেলে অংশুকে ওই মহিলার উপর প্রস্রাব করার নির্দেশ দেন অভিযুক্ত প্রমোদ সিং। এমনকী অভিযুক্ত বাবা-ছেলে তাদের মূত্র পান করতে বাধ্য করে বলে অভিযোগ।
নির্মম অত্যাচার সহ্য করে সেখান থেকে কোনওক্রমে পালিয়ে আসেন নির্যাতিতা মহিলা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, ওই মহিলা গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অবস্থা সঙ্কটজনক।
অভিযোগকারিণীর কথায়, দীর্ঘদিন ধরেই তাঁকে হেনস্থা করত প্রমোদ এবং তার দলবল। প্রমোদ সিং নগ্ন করে গোটা গ্রাম ঘোরানোরও হুমকি দিয়েছিল তাঁকে। বারবার পুলিশে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। এবারও অবশ্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন ওই মহিলা। অন্যদিকে, ঘটনাটি জানাজানির পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায় এলাকায়। দলিত মহিলার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয়রা। যদিও ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্ত দুইজন পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করা হয়েছে।