সানি সরকার, শিলিগুড়ি: বিড়ম্বনায় বিজেপি (BJP)। বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্ট (Raju Bista), নাকি প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা (Harsh Vardhan Shringla), লোকসভা নির্বাচনে (Loksabha election) দার্জিলিং কেন্দ্রে দলীয় প্রার্থীকে তা নিয়ে বিভ্রান্তি বাড়ছে বিজেপিতে। জনসংযোগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক ছোঁয়াচ বাঁচাতে সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডকে প্রাক্তন বিদেশসচিব তুলে ধরতে চাইলেও, সাধারণ মানুষের বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না তিনি লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। হাইকমান্ড থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দেশ না আসার পরেও দলের একটা অংশ শ্রিংলার হয়ে ময়দানে নামায় শিলিগুড়ির (Siliguri) বিজেপি যে দুটি ভাগে বিভক্ত, তাও বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে না আমনাগরিকদের। যা নিয়ে সাধারণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার যেমন সৃষ্টি হচ্ছে, তেমনই দলীয় নেতৃত্বকেও প্রশ্নের মুখেও পড়তে হচ্ছে।
এমন পরিস্থিতিতে কী করণীয় শীর্ষ নেতৃত্বর কাছে জানতে চাইল জেলা নেতৃত্ব। শ্রিংলার নাম উল্লেখ না করলেও, দলের কয়েকজন নেতা আগ বাড়িয়ে একজনকে প্রার্থী হিসেবে তুলে ধরতে চাইছে এবং এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে, দল সম্পর্কে ভুল বার্তা যাচ্ছে- এমন নানা বিষয় উল্লেখ করে রাজ্য নেতৃত্বর কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। যা স্বীকার করে নিয়ে বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডল বলছেন, ‘রাজ্য নেতৃত্ব সমস্তটাই জানেন। আমাদের তরফেও সমস্ত বিষয় জানানো হয়েছে। যদি কেউ দলবিরোধী কাজ করে, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে তার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে।’
নিজেকে ভূমিপুত্র হিসেবে তুলে ধরার চেষ্টা করলেও কোথাও তিনি রাজনীতির কথা বলছেন না। বরং জনসংযোগের ক্ষেত্রে দার্জিলিং ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ব্যানারে সামাজিক কর্মকাণ্ডে জোর দিচ্ছেন। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে তাঁর শিলিগুড়ির বিভিন্ন পাড়ায় ছুটে বেড়ানোর মধ্যে দিয়ে বিজেপির কোন্দল যেন নতুন করে প্রকট হয়ে উঠেছে। কেননা, দলের শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে এখনও কোনও নির্দেশ না এলেও মনোরঞ্জন মণ্ডল, সাম্য মুখোপাধ্যায়, বাপ্পা সাহাদের মতো কিছু নেতা তাঁর সমস্ত কর্মসূচিতে সবসময় থাকছেন। ‘ভালোবাসা ও ভালো লাগা’র টানে রয়েছেন, বলছেন তাঁরা। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে দলীয় স্তরে অস্বস্তিতে পড়তে হচ্ছে দলের জেলা নেতৃত্বকে। প্রার্থী-প্রচার নিয়ে দলের হাইকমান্ড থেকে কোনও নির্দেশ না আসার পরেও কীভাবে জেলা কমিটির কয়েকজন সদস্য প্রাক্তন বিদেশসচিবের হয়ে মাঠে নেমেছেন তা নিয়ে দলীয় বৈঠকেও প্রশ্ন উঠেছে।
দলীয় সূত্রে খবর, গত ১২ জানুয়ারি রাজ্য কমিটির দুই সাধারণ সম্পাদক দীপক বর্মন ও জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে আয়োজিত বৈঠকেও এমন প্রশ্ন তোলেন অনেকে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থীতালিকা প্রকাশ না করা পর্যন্ত প্রার্থী প্রচার নয় বলে স্পষ্ট করে দেন তাঁরা। পাশাপাশি তাঁরা জানান, শিলিগুড়িতে যা হচ্ছে, তা রাজ্য নেতৃত্বের নজরে রয়েছে। এখন দেখার জেলা নেতৃত্বের চিঠি পাওয়ার পর রাজ্য নেতৃত্ব কী পদক্ষেপ করে।