রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: দার্জিলিং থেকে পুনরায় রাজু বিস্টকেই (Raju Bista) প্রার্থী করতে হবে। এমনই দাবি করে বিজেপির দার্জিলিং পার্বত্য শাখা ও শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা কমিটি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছে। নেতৃত্বের অভিযোগ, প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার আগেই হর্ষবর্ধন শ্রিংলা (Harshvardhan Shringla) যেভাবে পাহাড়-সমতলে জনসংযোগ করছেন তাতে দলের ক্ষতি হচ্ছে। নেতৃত্বকে প্রার্থী নিয়ে সাধারণ মানুষের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। এমনকি শ্রিংলা দলের যে গোষ্ঠীকে নিয়ে ঘুরছেন সেটাও ঠিক হচ্ছে না। লোকসভা ভোটের আগে দার্জিলিং জেলার (Darjeeling Lok Sabha) এই ঘটনা পদ্ম শিবিরকে বিপাকে ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
শ্রিংলা বলেন, ‘আমি বিজেপি প্রার্থী হিসাবে জনসংযোগ করছি, একথা কে বলেছে? আমি তো কোথাও রাজনীতি নিয়ে প্রচার করছি না। দার্জিলিং ওয়েলফেয়ার সোসাইটির হয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করছি।’ বিজেপির শিলিগুড়ি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অরুণ মণ্ডল বললেন, ‘প্রার্থী কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ঠিক করবে। বাকি অভ্যন্তরীণ কোনও বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে কিছু বলতে পারব না।’
প্রাক্তন বিদেশসচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা বেশ কয়েক মাস ধরেই এখানকার মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন। তিনি নিয়ম করে দার্জিলিং, কালিম্পং, শিলিগুড়ি ঘুরছেন। সমাজসেবামূলক কাজকর্মের পাশাপাশি জনসংযোগেও জোর দিয়েছেন। সাতসকালে বিভিন্ন পাড়ায় পৌঁছে প্রাতর্ভ্রমণকারীদের সঙ্গে আলাপ সারছেন, আবার কখনও বন্ধ চা বাগানে গিয়ে শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। শ্রিংলা মুখে কিছু না বললেও তিনি যে লোকসভার প্রার্থী হিসাবে জমি তৈরি করছেন তা সাধারণ মানুষ বুঝেছেন।
তবে, বর্তমান সাংসদ রাজু বিস্টও ময়দান ছাড়তে নারাজ। কিছুদিন আগে তিনি শিলিগুড়িতে বলেছেন, ‘আমিই প্রার্থী। মিলিয়ে নেবেন।’ এখনও রাজু নিয়মিত এলাকায় ঘুরছেন, এই অঞ্চলের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে দিল্লিতে দরবার করছেন। কিন্তু প্রার্থীপদ নিয়ে কোথাও যেন একটা আতঙ্ক তাঁর মধ্যেও কাজ করছে। বিজেপি প্রতিবারই দার্জিলিংয়ে প্রার্থী বদল করেছে এবং শ্রিংলার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীই শুধু নয়, বিজেপির শীর্ষ মহলে ভালো যোগাযোগ রয়েছে। তিনি কি কোনও সংকেত না পেয়ে মিছিমিছি এখানকার মাটি কামড়ে পড়ে রয়েছেন? এই আতঙ্ক থেকেই সাংসদ এবার দলের জেলা নেতৃত্বকে কাজে লাগিয়েছেন, এমনই খবর।
বিজেপি সূত্রের খবর, রাজু বিস্ট যেভাবে গত পাঁচ বছর কাজ করছেন তাতে তাঁকেই আবার প্রার্থী করার দাবি জানিয়ে এখান থেকে চিঠি দিল্লিতে পৌঁছে গিয়েছে। এর পিছনে অনেকেই বর্তমান সাংসদের হাত দেখছেন। তবে পাহাড়-সমতলের নেতৃত্বের অনেকেরই বক্তব্য, রাজু বিস্ট পাঁচ বছরে খুব ভালো কাজ করেছেন। এখানকার বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে নিয়মিত কেন্দ্রের কাছে দরবার করে দাবি আদায় করেছেন। আপদে–বিপদে নিজের এলাকায় ছুটে এসেছেন। যা অতীতে কোনও সাংসদ করতে পারেননি। দলীয় সংগঠন তৈরির ক্ষেত্রেও সাংসদের ভূমিকা রয়েছে। বুথ স্তর পর্যন্ত কমিটি গঠন আগে কোনওদিন হয়নি। তাই জেলা বিজেপি রাজুকেই চাইছে।