উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ১০ বছর পর মাত্র ৬ ঘন্টার জন্য ছাড়া পেয়েছিলেন সারদা কাণ্ডে ধৃত সারদাকর্তা সুদীপ্ত সেনের সহযোগী দেবযানী মুখোপাধ্যায়। অসুস্থ মা’কে দেখতে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল তাকে। পুলিশের বেষ্টনীতে তিনি ঢাকুরিয়ার বাড়িতে পৌছে অসুস্থ মাকে দেখে আসেন। ৬ ঘন্টা জেলের বাইরে কাটিয়ে তিনি ফের ফিরে যান দমদমের মহিলা সংশোধনাগারে।
প্যারোলে মুক্তি পেয়ে প্রায় ১ দশক পরে ঢাকুরিয়ার বাড়িতে ফিরলেন দেবযানী। মা শর্বরী মুখোপাধ্যায়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে মাকে দেখতে যাওয়ার জন্য প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেছিলেন দেবযানী মুখোপাধ্যায়। সেই আবেদন মঞ্জুর হওয়ায় ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকুরিয়ার বাড়িতে গিয়েছিলেন তিনি।
রবিবার দেবযানী যখন বাড়ি থেকে বের হন তখন অঝোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। সংবাদমাধ্যমে আগেই খবর চাউর হয়ে গিয়েছিল দেবযানী আসছেন তাঁর নিজের বাড়িতে। চারপাশে প্রতিবেশীরাও ভিড় জমিয়েছেন। কৌতুহল প্রত্যেকের। এদিন দুপুরে দমদম মহিলা সংশোধনাগার থেকে বের হয়েছিলেন দেবযানী। এরপর পুলিশি নিরাপত্তা ছিল চোখে পড়ার মতো। ঢাকুরিয়ার মুখার্জি পাড়া লেনের গলির তিনতলা বাড়িটাই দেবযানীদের। বাড়িতে ঢোকেন তিনি। মাত্র ৬ ঘণ্টার মধ্যে বেরিয়ে আসতে হবে তাঁকে। তবে এদিন বাড়ির ভেতরে সংবাদমাধ্যমকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। দেবযানী একান্তে মায়ের সঙ্গে কথা বলেন।
এতদিন পরে মায়ের পাশে বসলেন দেবযানী। সেই পুরানো বাড়ি, ঘর, বিছানা, খাট সবই আছে আগের মতো। তবে আগোছালো। শুধু এই বাড়ির মেয়েই এত বছর ধরে জেলে। মুক্তির অপেক্ষায় দিন কাটছে। সারদা কেলেঙ্কারির মতো ভয়াবহ অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। কিন্তু এত বছর পরে পাশাপাশি বসে ঠিক কী কথা হল মায়ের সঙ্গে?
টানা ৬ ঘন্টা মায়ের সঙ্গে কাটিয়ে ফের সংশোধনাগারে ফিরে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখোমুখী হয়ে দেবযানী বলেন, ‘মায়ের শরীর খুব একটা ভালো নেই। মাকে বলেছি ভালো থাকতে, শরীরের খেয়াল রাখতে। এছাড়া তো আমার আর কিছুই বলার নেই তাঁকে। আবার কবে মাকে দেখতে আসতে পারবো সেটাও জানিনা’।
এরপর সাংবাদিকরা জানতে চান জেলের ভিতরে আপনাকে কি কারোর নাম বলানোর জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে? পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে চিনতেন? এইসব প্রশ্নের উত্তরে দেবযানী বলেন, ‘অসুস্থ মাকে দেখতে এসেছি, এই ধরনের প্রশ্ন করে বিব্রত করবেন না’। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্কে কোনও কথাই বলেননি।
এরপরই দেবযানী কিছুটা হেঁটে প্রিজন ভ্যানে উঠে পড়েন। বৃষ্টিভেজা কলকাতার রাজপথ ধরে সেই ভ্যান চলে যায় দমদম সংশোধনাগারে। ২০১৩ সালের ২২ এপ্রিল কাশ্মীর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল দেবযানীকে। গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সারদা কর্তা সুদীপ্ত সেনও। তারপর থেকেই টানা জেলবাস।