উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ সর্বত্রই জয়জয়কার তৃণমূলের। বিজেপির শক্তঘাটি উত্তরবঙ্গেও থাবা বসিয়েছে তৃণমূল। নিজেদের গড় বা খাসতালুক বলে পরিচিত জেলাতেও পরাজয়ের মুখ দেখেছে বিজেপি। এমনকি মুখ ফিরিয়েছে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দত্তক নেওয়া গ্রামও। এটাই এখন রাজ্য-রাজনীতিতে অত্যন্ত চর্চিত বিষয়।
দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট ব্লকের ভাটপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গ্রামের নাম চকরাম। চকরাম গ্রামেও হেরেছে গেরুয়া শিবির। ২০১৯ সালে এই গ্রামটিকে দত্তক নিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। আদিবাসী অধ্যুষিত এই গ্রামকে দত্তক নেওয়ার পর পথে কিছু সৌরবাতি লাগিয়েছিলেন তিনি সাংসদ তহবিলের টাকায়। তবে গ্রামের সার্বিক উন্নয়ন বলতে যা বোঝায় যেমন রাস্তাঘাট, পানীয় জল থেকে শুরু করে ন্যূনতম পরিষেবার কোনও ব্যবস্থা হয়নি। তাই সাংসদ এবং তাঁর দলের উপর বড় ক্ষোভ জন্মেছিল গ্রামবাসীদের। আর পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই গ্রাম সংসদেই শতাধিক ভোটে হেরেছে বিজেপি। চকরাম সংসদে মোট ভোটার সংখ্যা ১০৭৩ জন। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী সুধা দেবনাথ পেয়েছেন ৪৮৯ ভোট। ৩৭৭ ভোট পেয়ে বিজেপি প্রার্থী অষ্টমী দেবনাথ রয়েছেন তৃতীয় স্থানে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দত্তক নেওয়া গ্রামে এটাই এবারের পরাজয়ের ছবি।
এই হারের পর তৃণমূল কটাক্ষের সুরে বলছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দত্তক নেওয়া গ্রামও তাঁকে ত্যাজ্যপুত্র করেছে। জেলা মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি স্নেহলতা হেমব্রম বলেন, ‘দত্তক নিলেও সুকান্ত মজুমদার গ্রামবাসীদের নিরাশ করেছেন। কিন্ত তাঁকে ওই এলাকায় খুব বেশি দেখা যায়নি। কয়েকটি সোলার লাইট ছাড়া আর কিছু করেননি। সুকান্তবাবু স্বঘোষিতভাবে দত্তক নিয়ে গ্রামের মানুষের জন্য কোনও কাজ করেননি। তাই তাঁকে গ্রামের মানুষ ত্যাজ্যপুত্র করেছেন নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।’ যদিও বিজেপি জেলা সভাপতি স্বরূপ চৌধুরী বলেন, ‘এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে সেই গ্রামে ছাপ্পা ভোট দিয়েছিল তৃণমূল।’
এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে দিলীপ ঘোষ, শান্তনু ঠাকুররা পর্যন্ত হেরেছেন নিজেদের বুথে। পূর্ব মেদিনীপুরে যে হুঙ্কার ছেড়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী ফলাফলের পর তা চুপসে গিয়েছে। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারে ধ্বস নেমেছে বিজেপিতে। অগত্যা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং টিম হাজির। শুক্রবার অমিত শা জরুরি তলব করেছিলেন সুকান্ত মজুমদারকে। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, অগাস্ট মাসে বাংলায় এসে সাংগঠনিক হাল–হকিকত সরেজমিনে দেখবেন।