শালকুমারহাট: এক মাসে ২৫ দিনই জলদাপাড়া বনাঞ্চল থেকে হাতি ঢুকেছে লোকালয়ে। অন্তত এমনটাই দাবি স্থানীয়দের। তাঁদের অভিযোগ, কখনও ঘর ভাঙছে, কখনও বেড়া। ক্ষতিগ্রস্ত বিঘার পর বিঘা জমির ফসল। এসবের পরও পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ মেলে না। সুরক্ষা ব্যবস্থা ঢিলেঢালা। তাই এবার জোটবদ্ধ হচ্ছেন জলদাপাড়া বনাঞ্চল সংলগ্ন আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের শালকুমার-১ ও শালকুমার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা।
এই নিয়ে ১২টি যৌথ বন পরিচালন সমিতি এলাকার দুই শতাধিক বাসিন্দা শালকুমারহাটের কাশিয়াবাড়িতে বৈঠক করেন। সেখানে শালকুমারহাটের জন্য এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের দাবি ওঠে। ওই বৈঠকে ছিলেন জনপ্রতিনিধিরা। তাঁরা দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়ে খুব তাড়াতাড়ি বন দপ্তরের সঙ্গে কথা বলার আশ্বাস দিয়েছেন।
আলোচনায় অংশ নেওয়া আলিপুরদুয়ার-১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ভোলানাথ রায়ের কথায়, ‘বাসিন্দারা এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের দাবি তুলেছেন। নিরাপত্তা বাড়ানোর পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ বৃদ্ধির কথাও সেখানে উঠেছে। সমস্ত ইস্যু নিয়ে দ্রুত বন দপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলা হবে।’ শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শ্রীবাস রায়ের বক্তব্য, ‘এখন শালকুমারহাটে হাতির উপদ্রব অনেকটা বেড়েছে। স্থানীয়দের দাবির সঙ্গে আমি সহমত।’
সমর্থন রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসেরও। দলের আলিপুরদুয়ার-১ ব্লক সভাপতি তুষারাকান্তি রায় বলছিলেন, ‘আমিও বৈঠকে ছিলাম। বন্যপ্রাণী এবং এলাকাবাসী যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেজন্য বন দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা হবে।’
শালকুমারহাটের তিনপাশ ঘেরা জলদাপাড়া বনাঞ্চল। জলদাপাড়া ইস্ট, জলদাপাড়া ওয়েস্ট এবং জলদাপাড়া সাউথ রেঞ্জ। জলদাপাড়ার জন্য এলিফ্যান্ট স্কোয়াড রয়েছে মাদারিহাটে। তাই শালকুমারহাটের জন্য এলিফ্যান্ট স্কোয়াডের দাবি তোলেন স্থানীয়রা। কারণ, এই স্কোয়াড থাকলে হাতি তাড়ানোর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বনকর্মীরা এলাকায় থাকবেন। এতে দ্রুত বুনোদের জঙ্গলে ফেরানো সম্ভব হবে।
মণ্ডলপাড়ার যৌথ বন পরিচালন সমিতির প্রতিনিধি নৃপেন মোদকের কথায়, ‘৩০ দিনের মধ্যে কমবেশি ২৫ দিনই এলাকায় হাতি ঢুকেছে। বহু মানুষের বহু ক্ষতি হয়েছে। প্রয়োজনমতো ক্ষতিপূরণ মেলে না। তাই এদিন সভার আয়োজন করা হয়।’ শালকুমার-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের বন সংলগ্ন দিলীপ বর্মনেরও একই বক্তব্য।
পরবর্তীতে বাসিন্দারা ফের বৈঠক করে দাবি আদায়ের জন্য কমিটি গঠন করবেন। তারপর বন দপ্তরের কাছে দাবিপত্র পেশ করবে কমিটি।