দিনহাটা: আজকের দিনে সন্তানকে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার দেখতে চেয়ে অভিভাবকরা যখন কলকাতা কিংবা রাজ্যের সীমা ছাড়িয়ে দিল্লি অথবা রাজস্থানের মতো জায়গায় কোচিংয়ে পাঠাচ্ছেন, তখন প্রান্তিক শহর দিনহাটার ছেলে মাহবুব আলমের সাফল্য যেনও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, বিষয়কে ভালোবাসলে সাফল্য নিজে থেকেই ধরা দেয়। সংখ্যা নিয়ে গবেষণার কাজে প্রখ্যাত গণিতবিদ শ্রীনিবাস রামানুজনের ভক্ত মাহবুব এখন সুইডেনে।
দিনহাটা বৌবাজার সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা মাহবুব দিনহাটা উচ্চবিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। শিক্ষক জয়ন্ত চক্রবর্তী বলছেন, ‘মাহবুবের গণিতের প্রতি প্রবল আগ্রহ ছিল। আর তাই গণিতের বিভিন্ন মেধা পরীক্ষায় মাহবুব যাতে অংশগ্রহণ করতে পারে সেই বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকারা তাকে প্রতিনিয়ত উৎসাহিত করতেন।’ ২০১১ সালে উচ্চমাধ্যমিকের পরে গণিত নিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজে স্নাতক স্তরে ভর্তি হন মাহবুব। সেখানে স্নাতকে স্বর্ণপদক লাভের পর কলকাতার ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট (আইএসআই) থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। এরপর ভারতবর্ষের অন্যতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান টাটা ইনস্টিটিউট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর) থেকে ভাটনাগর পুরস্কারে ভূষিত ডঃ অনীশ ঘোষের অধীনে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন শেষে বর্তমান সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চতর গবেষণা করছেন। বর্তমানে তাঁর গবেষণার বিষয় ‘নম্বর সিস্টেম’। আমাদের জানা-অজানা সংখ্যাগুলোর প্রত্যেকটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য এবং চরিত্র রয়েছে। সেই বৈশিষ্ট্য এবং চরিত্র উদঘাটন করাই তাঁর গবেষণার কাজ।
মাহবুব জানান, গত দু’বছর সুইডেনে থেকে গবেষণার কাজ করছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের মতো দেশে মৌলিক গবেষণার কাজ যত এগোবে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি তত প্রসারিত হবে। তাই মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের অবশ্যই ফান্ডামেন্টাল সায়েন্সের প্রতি আগ্রহী হওয়া উচিত।’ পাশাপাশি তিনি জানান, ছাত্রছাত্রীদের উচিত নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে এগিয়ে যাওয়া। তাহলে সেই পড়াশোনায় সাফল্যের পাশাপাশি আনন্দ হবে।