শিলিগুড়ি: ক্যানসার হ্যাজ অ্যান অ্যানসার। চিকিৎসকরা তা বহুদিন আগেই জানিয়েছেন। কিন্তু সমস্যা হল সঠিক সময়ে তা চিহ্নিতকরণ। তবে এবার সে রাস্তাও দেখাচ্ছেন শিবমন্দিরের সমরনগর এলাকার বাসিন্দা ডঃ সৌভিক পণ্ডিত। ‘রেড এমিটিং মলিকিউলস’ বা লাল নির্গত অণু নিয়ে গবেষণা করেছেন আইআইটি পাটনার এই গবেষক। ইতিমধ্যেই তাঁর এই গবেষণাপত্র প্রকাশ পেয়েছে ‘আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটি’, ‘রয়্যাল সোসাইটি অফ কেমেস্ট্রি’র মতো আন্তর্জাতিক জার্নালে।
সঠিক সময়ে চিহ্নিত না করা গেলে ক্যানসার কতটা প্রাণঘাতী রোগ হতে পারে তা অজানা নেই কারও। কিন্তু সঠিক সময় চিহ্নিত হবে কী করে? এই প্রশ্নই যেন বারংবার উঠে আসে। এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই ‘রেড এমিটিং মলিকিউলস’ নিয়ে গবেষণা চালিয়েছেন সুকনার আর্মি পাবলিক স্কুলের প্রাক্তনী সৌভিক। সেখানেই ওঠে এসেছে বিভিন্ন তথ্য। শুধু ক্যানসারই নয়, আরও জটিল রোগের চিহ্নিতকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে রেড এমিটিং মলিকিউলসের।
বর্তমান চিকিৎসাবিজ্ঞানের কথা মাথায় রেখে ‘আল্ট্রাফাস্ট স্পেকট্রোস্কোপি’র মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে গবেষণা নিয়ে ডঃ পণ্ডিত বলেন, ‘পরিবেশে যে সকল জৈবিক সক্রিয় অণু রয়েছে তার মধ্যে আলো ফেলে যেসব পরিবর্তন আসে তা মনিটর করা হয়। সেজন্য ইউভি, ইমেজিং, এসপিএস, রমন স্পেকট্রোস্কোপি, সেম (স্ক্যানিং ইলেক্ট্রন মাইক্রোস্কোপি)-এর মতো অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয়।’ আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় গভর্নমেন্ট কলেজের মেধাবী এই প্রাক্তনী আরও জানান, সঠিক সময়ে রোগ চিহ্নিত করে মানুষকে সঠিক চিকিৎসা দিয়ে যাতে সুস্থ করা যায় সেজন্যই এই বিষয়ে তিনি গবেষণা করেছেন।
মেধাবী এই গবেষক উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে রয়াসনে স্নাতকোত্তর হন। তারপরেই গবেষণার জন্য জোরকদমে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। তবে কোনও ইনস্টিটিউশনে টিউশন পড়ে নয়, বরং বাড়িতে বই খুঁটিয়ে পড়ে ও প্রয়োজনে ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েই আইআইটিতে পড়ার সুযোগ আসে তাঁর।
প্রাক্তনীর সাফল্যে খুশি হয়ে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায় গভর্নমেন্ট কলেজের অধ্যক্ষ ময়ূখ সরকার বলেন, ‘পড়ুয়াদের সাফল্যে কলেজের সুনাম বৃদ্ধি পায়।’ ছেলের সাফল্যে গর্বিত তাঁর বাবা জয়ন্ত পণ্ডিত ও মা রেখা পণ্ডিত।’