বক্সিরহাট: স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৬৩ জন। তিনটি শ্রেণিকক্ষ (Classroom) থাকলেও একটি স্কুলে পড়ুয়াদের (Students) যে সুবিধা থাকা প্রয়োজন তার সিংহভাগই নেই। স্কুলটিতে শৌচাগার নেই, শ্রেণিকক্ষের অভাব রয়েছে। নেই প্রয়োজনীয় শিক্ষক। শিক্ষক না থাকায় শিক্ষা ব্যবস্থাটাই ধুঁকছে তুফানগঞ্জ-২ (Tufanganj) ব্লকের রামপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জালধোয়া এলাকার জালধোয়া জুনিয়ার হাইস্কুলে। এই স্কুলে একজন শিক্ষক এবং একজন গ্রুপ-ডি কর্মী পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ক্লাস নেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩-তে এই জালধোয়া জুনিয়ার হাইস্কুল তৈরি হয়। এই স্কুলে শুরু থেকে একজন শিক্ষক ও একজন শিক্ষিকা, গ্রুপ-ডি কর্মী ছিলেন। তখন পড়ুয়ার সংখ্যা ছিল ১৩০ জন। এরই মাঝে ২০১৮ সালে একজন শিক্ষিকা স্কুল থেকে বদলি হন। তখন থেকে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে গোটা স্কুল। তিনটি ঘরে পড়ুয়াদের ক্লাস নিতে হিমসিম খাচ্ছিলেন ওই শিক্ষক। তাঁর এই অবস্থা দেখে পড়ুয়াদের পড়াতে এগিয়ে আসেন স্কুলের গ্রুপ-ডি কর্মী।
স্কুলের দায়িত্বে থাকা একমাত্র শিক্ষক বিপ্লব সরকারের কথায়, ‘৬৩ জন পড়ুয়াকে সামলানো যথেষ্ট কষ্টকর। স্কুলে একজন গ্রুপ-ডি কর্মী রয়েছেন। তিনিও দুটি বিভাগে ক্লাস নেন। এভাবে কোনওরকমে চলছে স্কুল। কমপক্ষে আরও দুজন শিক্ষকের প্রয়োজন রয়েছে।’
বিদ্যালয়ের পড়ুয়া কস্তুরী সাহা জানায়, দুটি ক্লাসে লেখার কাজ দিয়ে অন্য ক্লাসে গিয়ে শিক্ষক পড়ান। তাই স্কুলে পড়াশোনা হয় না তাদের। অনেকে স্কুলে গুরুত্ব সহকারে পড়ে। আবার অনেকেই সময় কাটিয়ে বাড়ি ফিরে যায়। এদিকে স্কুলে শৌচাগার নেই। সে জানায়, শৌচকর্ম সারতে পড়ুয়াদের ভরসা আশপাশের বাড়ি। শুধু তাই নয়, স্কুলে চারটি শ্রেণির পঠনপাঠন চললেও ক্লাসরুমের সংখ্যা মাত্র তিনটি। তাই মাঝেমধ্যে একই শ্রেণিকক্ষে দুটি পৃথক শ্রেণির পড়ুয়াদের পড়াতে বাধ্য হন শিক্ষক।
প্রয়োজনীয় শিক্ষক না থাকায় পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে ওই স্কুলের পড়ুয়ারা। তাই অনেকেই তাঁদের ছেলেমেয়েদের স্কুল থেকে সরিয়ে প্রায় ৫ কিমি দূরে অন্য হাইস্কুলে ভর্তি করাচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা শান্তনু সাহা, মায়া সাহার বক্তব্য, শিক্ষকের ভরসাতে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাই। তবে ওই স্কুলে শিক্ষকের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। শিক্ষকের অভাবে পড়ুয়ারা পড়াশোনার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সবার পক্ষে বাচ্চাদের পাঁচ কিমি দূরে অন্য স্কুলে পাঠানো সম্ভব নয়। তাই আমরা চাই স্কুলে শিক্ষক আসুক।
শিক্ষকের সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন রামপুর সার্কেলের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক বিপ্লব সিংহ। তিনি জানান, ওই স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি উপরমহলে জানানো হয়েছে। স্কুলের অন্য সমস্যাগুলি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।