সৌরভ দেব, জলপাইগুড়ি: ২০২১ সালে সদর বিধানসভা আসনটি দখল করেছিল তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। অথচ সেই ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে, বিধানসভার মধ্যে থাকা জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পুর এলাকায় এগিয়ে ছিল বিজেপি (BJP)। কেবলমাত্র শেষ বিধানসভা ভোটেই নয়, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটেও পুরসভার ২৫টি ওয়ার্ডে বিপুল ভোটে পিছিয়ে তৃণমূল। আসন্ন লোকসভা ভোটে শহর এলাকার ভোট নিজেদের দিকে টানতে তৃণমূল অনেক আগে থেকেই প্রচারে নেমে পড়েছে। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলিকে হাতিয়ার করে প্রচার শুরু করেছে ঘাসফুল। অন্যদিকে, শহরকে নিজেদের দখলে রাখলেও ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের তুলনায় ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির ভোট অনেকটাই কমেছে। যে কারণে নিজেদের ভোটব্যাংককে পুনরায় বাড়াতে মরিয়া গেরুয়া শিবিরও।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে সদর বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছিলেন ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা। অন্যদিকে, বিজেপির প্রার্থী হয়েছিলেন সৌজিৎ সিংহ। সামান্য ভোটে এই ভোটে জয়ী হয়েছিলেন প্রদীপ। তবে, ভোটের ফলাফল বিশ্লেষণে দেখা গিয়েছে পুর এলাকায় এগিয়ে ছিল বিজেপি। বিধানসভা ভোটে পুর এলাকায় তৃণমূল পেয়েছিল ২৬,৫৩৬টি ভোট। সেখানে বিজেপি পেয়েছিল ২৯,৫১৪টি। কিছু ওয়ার্ডে সামান্য ভোটে তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও ২৫টি ওয়ার্ডের নিরিখে প্রায় তিন হাজার ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের ফলাফলের ক্ষেত্রে জলপাইগুড়ি পুর এলাকায় একচেটিয়া ভোট পেয়েছিল বিজেপি। শহর এলাকায় প্রায় ২০ হাজার ভোটে তৃণমূলের থেকে এগিয়ে ছিল বিজেপি। অন্যদিকে, শেষ পুরসভা ভোট নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে বিরোধীদের। এমনকি ভোটের ফলাফলে সন্তষ্ট না হয়ে আইনের দ্বারস্থ হতে দেখা গিয়েছিল কংগ্রেসের এক প্রার্থীকে।
বিজেপির শহর মণ্ডলের সভাপতি মনোজ শা বলেন, ‘শেষ পুরভোটে কীভাবে ভোট লুট হয়েছে, তা শহরের মানুষ দেখেছেন। যে কারণে আমরা পুরসভার ফলাফল নিয়ে ভাবছি না। শহর এলাকার মানুষ যে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে, তা শেষ লোকসভা এবং বিধানসভা ভোটের ফলাফলে পরিষ্কার। তবে লোকসভা ভোটের থেকে বিধানসভা ভোটে আমাদের ভোটব্যাংক কিছুটা কমেছে এটা ঠিক। লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে আমরা শহর এলাকায় প্রচার শুরু করে দিয়েছি। এবারও লোকসভা আসনটি যেমন বিজেপির দখলে থাকবে, তেমনি শহরের ভোটব্যাংক বাড়বে বলে আমরা মনে করি।’
অন্যদিকে, তৃণমূলের টাউন ব্লক সভাপতি তপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘গত লোকসভা ভোটের তুলনায় বিধানসভা ভোটে তৃণমূল অনেকটাই ভালো ফল করেছে। এই মুহূর্তে পুরসভার ২২টি ওয়ার্ড তৃণমূলের দখলে রয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা লোকসভা ভোট নিয়ে শহর এলাকায় প্রচার শুরু করে দিয়েছি। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো নিয়ে প্রচার করা হচ্ছে। এবার পুরসভার প্রতিটি ওয়ার্ডে তৃণমূল এগিয়ে থাকবে। লোকসভা আসনটি এবার আমরা পাব।’