উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ কাউন্টডাউন শুরু। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বাদেই ডুরান্ড কাপে যুবভারতী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। এটাই এই মরসুমে প্রথম কলকাতা ডার্বি। উত্তেজনার পারদে ফুটছে গোটা বাংলা। গত বারও ডুরান্ড দিয়েই শুরু হয়েছিল মরসুম। এ বারও তাই। ডার্বিতে গত আট বারের লড়াইয়ে হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। এবারও সেই জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতে মরিয়া মোহনবাগান। অন্যদিকে ইস্টেবেঙ্গলও সর্বশক্তি দিয়ে মাঠে ঝাঁপাবে, সেই আশাতেই বুক বেঁধেছেন লাল হলুদ সমর্থকেরা।
শনিবার বিকেল ৫টায় কলকাতার যুবভারতী স্টেডিয়ামে ডুরান্ড কাপে পরস্পর মুখোমুখি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। ডার্বিতে টানা ৮ বার হেরেছে ইস্টবেঙ্গল। গত কয়েক বছরের চেয়ে এ বার তাদের দল তুলনায় ভাল। গতবার বিনিয়োগকারীর সঙ্গে ক্লাবের ঝামেলার কারণে দল গঠন হয়েছিল দেরিতে। এ বার বিনিয়োগকারী ইমামি শুরু থেকেই ভাল ফুটবলার নেওয়ার জন্য ঝাঁপিয়েছিল।তবে ইস্টবেঙ্গলের তুলনায় যথেষ্টই শক্তিশালী মোহনবাগান। এই মুহূর্তে দেশের সেরা তিন জন মিডফিল্ডার, সাহাল আব্দুল সামাদ, অনিরুদ্ধ থাপা এবং লিস্টন কোলাসো খেলেন মোহনবাগানে। প্রথম দু’জনকে এ বারই দলে আনা হয়েছে। পাশাপাশি কাতার বিশ্বকাপে লিয়োনেল মেসির বিপক্ষে খেলা জেসন কামিংস প্রচুর অর্থের বিনিময়ে যোগ দিয়েছেন মোহনবাগানে। অস্ট্রেলিয়ায় নিজের শেষ ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন কামিংস।
ইস্টবেঙ্গল শেষ বার ডার্বি জিতেছিল সাড়ে চার বছর আগে অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি ২০১৯ সালে। মাঝে একটি ড্র বাদ দিলে তার পর থেকে শুধুই জিতেছে মোহনবাগান। গত বারের ডুরান্ডে ১-০ জিতেছিল সবুজ মেরুন। বাকি প্রতি বারই দুই বা তার বেশি গোল খেয়ে হেরেছে তারা। সব মিলিয়ে মুখোমুখি লড়াইয়ে অবশ্য ইস্টবেঙ্গল এগিয়ে।
মোহনবাগান কোচ ফেরান্দো বলেন, ‘ইস্টবেঙ্গলের দল বেশ ভাল। এই মরসুমে তারা ভাল ফুটবলার সই করিয়েছে। মন্দারকে গোয়ায় দেখেছি। গত বার মুম্বইয়ে খেলেছে। তবে ডার্বি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। দুই দলই জিততে চায়। আমরাও ডার্বি জিতেই পরের রাউন্ডে যেতে চাই’।
ফেরান্দো আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে ডুরান্ডের চাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ এএফসি কাপের ম্যাচ। কারণ ওটা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা। সব ফুটবলারই যে ম্যাচ খেলার জন্যে পুরোপুরি ফিট তা বলব না। কারও কাছে ক্ষমতা রয়েছে ১২০ মিনিট খেলার। কেউ আবার ৪৫ মিনিট খেলতে পারবে। কিন্তু গোটা দল নিয়েই আমরা কাজ করছি’।
এই ডার্বি প্রসঙ্গে ইস্টবেঙ্গল কোচ কুয়াদ্রাত বলেন, ‘দলে ফুটনেসের অভাব রয়েছে। দেরি করে শিবিরে আসায় এখনও দলে বোঝাপড়ার অভাব রয়েছে। বাংলাদেশ আর্মির বিরুদ্ধে অনেক ভুল করেছি।তবু গত সপ্তাহে অনেক ভাল প্রস্তুতি নিয়েছি। এক মাস ধরে অনুশীলন করছে এ রকম ছ-সাতজন রয়েছে আমাদের দলে। এটুকু জানি, আমাদের ৯০ মিনিট মাঠে নেমে লড়তে হবে। সেটার জন্যে আমরা তৈরি’।
কুয়াদ্রাত আরও বলেন, ডার্বির প্রায় ১০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। যথেষ্ট উন্মাদনা রয়েছে বাংলাজুড়েই। দুর্ভাগ্যবশত আমার হাতে পুরো দল নেই। মন্দারের (রাও দেশাই) মতো ফুটবলারেরা অনেক আগে এসেছে। আমরা চাইব যতটা সম্ভব লড়াই দেওয়ার এবং সমর্থকদের গর্বিত করার। ইস্টবেঙ্গল নতুন দল হলেও মন্দারের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার রয়েছে দলে। তাই ওদের হারানোর মতো বিকল্প আমাদের হাতে রয়েছে’।
মোহনবাগানের সম্ভাব্য একাদশঃ বিশাল কাইথ, শুভাশিস বসু, ব্রেন্ডন হ্যামিল, আনোয়ার আলি, আশিস রাই, গ্লেন মার্টিন্স, লিস্টন কোলাসো, হুগো বুমোস, মনবীর সিংহ, দিমিত্রি পেত্রাতোস, সুহেল ভাট।
ইস্টবেঙ্গলের সম্ভাব্য একাদশঃ প্রভসুখন গিল, হরমনজ্যোত সিংহ খাবরা, জর্ডান এলসে, লালচুংনুঙ্গা, মন্দার রাও দেশাই, নন্দকুমার, সাউল ক্রেসপো, শৌভিক চক্রবর্তী, বোরজা হেরেরা, নাওরেম মহেশ, জেভিয়ার সিভেরিয়ো।