উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ ১৫ দিনের মাথায় ফের ডার্বি জয় ইস্টবেঙ্গলের (East Bengal)। মনোবল ছিল তুঙ্গে। সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই এদিন আইএসএলের কলকাতা ডার্বিতে (ISL Kolkata derby) মাঠে নামে। টানটান উত্তেজনায় ভরা ছিল যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন। একসময় উত্তপ্ত হল যুবভারতী। একের পর এক হলুদ কার্ড দেখল দুই দলের খেলোয়াড়। শেষ পর্যন্ত ২-২ গোলে ম্যাচ শেষ হল কলকাতা ডার্বি।
কলিঙ্গ সুপার কাপে মাত্র ১৫ দিন আগেই ডার্বিতে জয় পেয়েছে ইস্টবেঙ্গল। শনিবার যুবভারতীতে আইএসএলে মুখোমুখি হয় ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগান (East Bengl vs Mohunbagan)। এদিন খেলার মাত্র ৩ মিনিটের মাথায় গোল পায় লালহলুদ। বাঁ-দিক থেকে আক্রমণে ওঠে ইস্টবেঙ্গলের মহেশ বল বাড়ান নিশুকে। নিশু আবার বক্সে দাঁড়িয়ে থাকা অজয় ছেত্রীকে ক্রস বাড়ান। সেই বলই মোহনবাগানের জালে জড়িয়ে দেন অজয়। ১৪ মিনিটে হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটের কারণে মোহনবাগানের সেন্টার-ব্যাক আনোয়ার আলি মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন। এটা বড় ধাক্কা সবুজ-মেরুনের। তাঁর জায়গায় নামলেন আমনদীপ।
১৭ মিনিটের মাথায় গোল শোধ করেন মোহনবাগানের সাদিকু। ব্রেন্ডন হ্যামিলের বাড়ানো বলে ভলিতে গোল করেন সাদিকু। ১-১ হয়ে যায় ম্যাচের ফল। উচ্ছ্বাসে ভেসে যায় সবুজ-মেরুন গ্যালারি। লাল-হলুদ গোল খেতেই স্ট্র্যাটেজি বদলান কোচ কুয়াদ্রাত। ক্রেসপোকে তুলে নামালেন সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তবে কুয়াদ্রাতকে কেন পরিবর্তন করা হল তা স্পষ্ট নয়। প্রথমার্ধে ম্যাচের ফল ১-১।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলা শুরু হতে আক্রমণ প্রতি আক্রমণে যায় দুই দলই। র্যাশ ট্যাকলের জন্য অজয়কে শুধু হলুদকার্ড দেখায় রেফারি। অজয় ছেত্রী পিছন থেকে এসে অকারণেই হ্যামিলকে ফাউল করেন। ৫৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল পাল্টা আক্রমণে ওঠে। দীপক টাংরি বক্সের মধ্যে মহেশকে ফাউল করে হলুদকার্ড দেখেন। পেনাল্টি দেওয়া হয় ইস্টবেঙ্গলকে। ৫৫ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করেন ক্লেটন সিলভা। ২-১ এগিয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল।
২-১ গোলে পিছিয়ে পড়ে মোহনবাগান কিছুটা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি করে। এরপরই আর্মান্দো সাদিকুকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এর ফলে সাদিকুকে পরের ম্যাচে পাবেন না হাবাস। ৬২ মিনিটে ইস্টবেঙ্গলের সায়নের সঙ্গে পেত্রাতোসের প্রথমে ঝামেলা শুরু হয়। সেখান থেকে সেই ঝামেলা বড় আকার নেয়। দুই দলের প্লেয়াররাই বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন। সায়ন মাঠে মাথা গরম করছে দেখে, কুয়াদ্রাত তাঁকে তুলে নেন। পরিবর্তে নামান বিষ্ণুকে।
৮৭ মিনিটে সমতা ফেরায় মহনবাগান। গোল করেন পেত্রাতোস। ৭ মিনিট ইনজুরি টাইম দেওয়া হয়। দুই দলই ব্যবধান বাড়াতে মরিয়া ছিল। শেষ পর্যন্ত আর গোলের ব্যবধান বাড়াতে পারেনি কোনও দলই। ২-২ গোলে অমিমাংসিতভাবে শেষ হল ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের আইএসএল কলকাতা ডার্বি।
ইন্ডিয়ান সুপার লিগে গত তিন মরশুমে কলকাতার দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মোট ছ’বার। প্রতিবারই জিতেছে সবুজ-মেরুন বাহিনী। ইস্টবেঙ্গল এই টুর্নামেন্টে আজ পর্যন্ত হারাতে পারেনি মোহনবাগানকে। দুই দলের দ্বৈরথে মোট ১৭ গোল হয়েছে। মোহনবাগান করেছে ১৫টি এবং ইস্টবেঙ্গল করেছে মাত্র দু’টি। সব মিলিয়ে এই মরশুমের আগে পর্যন্ত টানা আটটি ডার্বিতে হেরেছে লাল-হলুদ। এই বছর অবশ্য ডুরান্ড কাপ এবং সুপার কাপ মিলিয়ে দুই দলের তিন বার মুখোমুখিতে ২-১ এগিয়ে ইস্টবেঙ্গলই।