প্রায় প্রতি বছর মোবাইলে কয়েকটা ডেজিগনেশন সেভ করতে হয়। প্রিসাইডিং, সেকেন্ড পোলিং, সেক্টর ইত্যাদি শুধুই পদ। তাই সত্যি সত্যি কয়েকদিন পর নামগুলো মাথায় থাকে না, থাকে শুধু কিছু স্মৃতি। একটা অদ্ভুত ব্যাপার, এই লোকগুলোর সঙ্গে পরবর্তীকালে আর কোনও যোগাযোগও থাকেনি। হারিয়ে গিয়েছে ওরা ওই বুথের ভোটারদের মতোই। কিন্তু ভোটের ম্যাজিক ওখানেই লুকিয়ে থাকে। শুধু উত্তেজনা, ঝামেলাই ভোট নয়।
প্রতিবার ফেরার সময় ইলেকশন এজেন্ট, ওয়াটার ক্যারিয়ার, রান্নার মাসি বা এলাকার হোমরাচোমরা অনেক অনেক ভালোবাসা দিয়েছেন। কিন্তু মুখগুলো পালটে গেলেও কথা, ভালোবাসাগুলো যেন একইরকম। ‘এত সুন্দর করে ভোট নিলেন, আর এত তাড়াতাড়ি করলেন, আগে কোনওদিন হয়নি…’ ‘দাদা আপনার বাড়ি তো জলপাইগুড়ি, আসেন পরে একবার, দেখলেন আমাদের এলাকা কত শান্ত…’ ‘আসবেন কিন্তু…’।
অদ্ভুতভাবে মনে হয় এই ঘটনাগুলো যেন রেকর্ড করা, ওই যে মাঝে মাঝে মনে হয় না, এই ঘটনা আগেও ঘটেছে, ঠিক সেই রকম। কোনও এক প্রাইমারি স্কুলের আধ অন্ধকারে, ক্লান্ত অবসন্ন কিন্তু শেষ হওয়ার আনন্দে সব যেন একাকার। যেন মনে হয় প্ল্যানচেট করে আগের বারের ভোটকে ডেকে নিয়েছি।
কোথায় হরিয়ানা, কোথায় পঞ্জাব সব মিলেমিশে একশা, বন্দুক ঘাড়ে সদা হাস্যোজ্জ্বল মানুষগুলোকে নাকি লোকজনকে ভয় দেখাতে আনা হয়েছে। এত মিষ্টি ব্যবহার আমি শুধু কলেজ জীবনে প্রেমিক-প্রেমিকাদের দেখেছি। বাধ্য হয়েই বললাম, ‘আপ কাল থোরা অ্যাটিটিউড দিখানা পাবলিক কো’ তার উত্তরে হেসেই দিলেন ওঁরা। এরপর ডিউটির সময় এক অন্য রূপ দেখলাম ওঁদের। ভাবতে অবাক লাগে শুধু জীবিকার স্বার্থে কিছু মানুষকে আজীবন অভিনয় করে যেতে হয়। ফেরার পথে জড়িয়ে ধরলেন বাহিনীর হেড। এই দুই দিনে আমি এর থেকে শুধু বন্দুকের প্রকার ভেদ, যুদ্ধের কৌশল জানতে চেয়েছি। উনি জানতে চেয়েছেন আইপিএল, উত্তরবঙ্গের ঘোরার জায়গাগুলো নিয়ে।
সেক্টর, বিডিও বা বিভিন্ন অফিসের স্টাফদের অসীম লড়াই আর ধৈর্য দেখে মনে হয়, লোকে কেন সরকারি কর্মীদের হিংসে করে। আসলে করাই উচিত।
গভীর রাতে কাউন্টারে বসা বন্ধুর প্রশ্ন, দাদা শরীর ঠিক আছে তো! ফ্যানের তলায় গিয়ে বসো আমি ডেকে নেব। সত্যি লজ্জা লাগছিল, এঁদের অনেকের নিজের বাচ্চার সঙ্গে দেখা হয় না এক মাস হয়ে গেল। এক পরিবারকে চিনি। ওঁরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই ডিউটি দুটো আলাদা লোকসভায়। বাচ্চাটা একা থাকে বাড়িতে। তবুও মাঝরাতে হেসে হেসে কথা বলে যাচ্ছে। আর বলছে, ভিভিপ্যাটের ব্যাটারিটা প্লিজ একটু খুলে দেবেন। না হলে বলেছে জমা না নিতে। বাঁশের ঘেরার ওই পাশের ভাই, দাদা, বৌদি, বন্ধুগুলোকে প্রণাম করতে ইচ্ছে হচ্ছিল।
একদম শেষে মিষ্টির প্যাকেট হাতে দিয়ে এক ভাই বলল, এটা নিয়ে যাও, বাচ্চাদের দিও আর বাড়ি গিয়ে ভাত খাও, শেষ কখন খেয়েছ কে জানে! ভোট শুধু রক্তাক্ত নয়।
(লেখক শিক্ষক। জলপাইগুড়ি গোমস্তপাড়ার বাসিন্দা)
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ অভিষেক শর্মাকে সঙ্গে নিয়ে ২২গজে ঝড় তুললেন ট্র্যাভিস হেড। ৬২ বল…
শিলিগুড়িঃ ওষুধের দোকানের ক্যাশবাক্স খুলে সব টাকা নিয়ে হাপিস হয়ে গেল রোগীর এক পরিজন। বুধবার…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পরীক্ষায় অঙ্কে ২০০-তে ২১২! বর্তমানে পরীক্ষায় কাড়ি কাড়ি নম্বর না পেলে…
রায়গঞ্জঃ রবীন্দ্রজয়ন্তীতে এবারও বন্ধ থাকল রবীন্দ্র ভবন। ফলে রবীন্দ্র ভবনে রবীন্দ্র মূর্তিতে মাল্যদান ও শ্রদ্ধা…
উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: প্রয়াত বিশিষ্ট পরিচালক তথা সিনেমাটোগ্রাফার সংগীত শিবন (Sangeeth Sivan)। বুধবার মুম্বইয়ের…
গয়েরকাটা: দারিদ্রকে জয় করে উচ্চমাধ্যমিকে (HS Result 2024) নজরকাড়া সাফল্য জলপাইগুড়ির পুস্পিতা বিশ্বাসের। আংরাভাসা বংশীবদন…
This website uses cookies.