শিলিগুড়ি: কাকার দেখানো পথেই ভাইপোর উত্তরণ। দেশের সমস্যা মেটাতে কাকা গবেষণা করতেন। কীভাবে হিমালয় অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য রক্ষার পাশাপাশি প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায় তা নিয়ে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে ভাইপো ডঃ একলব্য শর্মা গবেষণা চালিয়েছেন। সেই গবেষণা এবারে স্বীকৃতি পেল। পরিবেশ রক্ষায় অন্য ধরনের এক অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে চলায় পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য শিলিগুড়ির একলব্যকে পদ্মশ্রী সম্মানের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। একলব্য উচ্ছ্বসিত। পরিবেশ রক্ষায় লক্ষ্যপূরণে তিনি এবারে সাথর্কনামা হতে চান।
একলব্যের কাকা ডঃ টিকারাম শর্মা খ্যাতনামা গবেষক ছিলেন। জন্মসূত্রে কার্সিয়াংয়ের বাসিন্দা একলব্য এই সূত্রে ছোটবেলা থেকে বাড়িতে নামীদের যাতায়াত দেখেছেন। কাকাকে ‘রোল মডেল’ করে এগিয়ে চলা ভাইপোর মনে একদিন দেশের জন্য কিছু করার ইচ্ছাটা মনের মধ্যে চেপে বসে। সেখানে থাকাকালীন সময় থেকেই পাবর্ত্য অঞ্চল নিয়ে গবেষণার ইচ্ছে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি। দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতাও করেছেন। ইতিমধ্যে ২০০টিরও বেশি গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ লিখেছেন। লক্ষ করে দেখেছেন যেভাবে পাহাড়ে অপরিকল্পিতভাবে বহুতল তৈরি হচ্ছে তাতে পরিবেশে ভয়ানক প্রভাব পড়ছে। এর জেরে ধস নামতে পারে। সমস্যা মেটাতে একলেব্যর দাওয়াই, স্যাটেলাইট টাউনশিপ গড়ে জায়গা সম্প্রসারণ করা। তাঁর পর্যবেক্ষণ, পাহাড়ি এলাকাগুলিতে মনিটরিং স্টেশন থাকলেও সেগুলি সংখ্যায় যথেষ্ট নয়। এগুলির সংখ্যা বৃদ্ধি প্রয়োজন। নাহলে ভবিষ্যতে ফের সিকিমের হ্রদ বিপর্যয়ের মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে।
একলব্য বর্তমানে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাঁর পদ্ম সম্মানপ্রাপ্তির খবর ছড়াতেই শুক্রবার থেকে একলব্যের অ্যাপার্টমেন্টের সামনে শুভানুধ্যায়ীদের ভিড়। দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ট শনিবার ওই অ্যাপার্টমেন্টে গিয়ে একলব্যকে শুভেচ্ছা জানান। একলব্য বললেন, ‘দীর্ঘ এতগুলি বছর ধরে যে গবেষণামূলক কাজ করে চলেছি তা স্বীকৃতি পাওয়ায় আমি সম্মানিত। তবে এখানেই থামতে চাই না। দেশের জন্য, দশের জন্য আরও কাজ করতে চাই।’